Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

Add question

মোঘল যুগের নগর শাসন সম্পর্কে আলোচনা করো।

মোঘল যুগের নগর শাসন

মোঘলযুগে ভারতের শহরগুলির জন্য পৌরশাসন ব্যবস্থা ছিল না, মোঘল শাসকদের কাছে শহর হল গ্রামের সমষ্টি, এদের কোন বিশেষ অধিকার, সুবিধা, শাসনতন্ত্র বা আইনগত অস্তিত্ব ছিল না, ঠিক এই কারণেই মোঘল যুগে শহরগুলি স্বয়ংশাসিত না হলেও ছিল স্বনিয়ন্ত্রিত।

শহরগুলি যৌথভাবে নিজেদের কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করত না, শহরগুলি ছিল বিভিন্ন মহল্লায় ভাগ করা। এই মহল্লাগুলি ছিল নিজেদের পঞ্চায়েতের অধীন, মহল্লার কোন সন্ত, অভিজাত বা জাতি প্রধান মহল্লার প্রধান হিসাবে কাজ করতেন। মোঘল শাসকরা শুল্ক স্থাপন ও সংগ্রহ, শান্তিরক্ষা ছাড়া আর কোন কাজ করতেন না।

মোঘল যুগে সুলতানি যুগের মত, শহরগুলির প্রশাসনিক দায়িত্ব ছিল কোতোয়ালদের ওপর। কোতোয়াল তার অধীনস্ত মহলদারদের নিয়ে নাগরিকদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষা করত। প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাহায্য নিত। মোঘল যুগে মহল্লাগুলি ছিল প্রায় স্বতন্ত্র কারণ এগুলি প্রাচীর দিয়ে পৃথক করে রাখা হত। মহল্লার দরজা রাত্রিবেলা বন্ধ রাখা হতো। মহল্লা তার অধিবাসীদের নূন্যতম প্রয়োজন মেটাতো।

শহরগুলি তাদের অভাব অভিযোগ সুবাদার বা সরকার প্রধানকে জানাতে পারত, কিন্তু সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে যেতে পারত না। মোঘল সরকার শহরের গভর্নর নিযুক্ত করত না, তবে গুরুত্বপূর্ণ শহরে, কেল্লা থাকলে, কেল্লাদার নিযুক্ত করত, তবে কেল্লাদারদের প্রশাসনিক দায়-দায়িত্ব ছিল না।

মোঘল শহরগুলিতে কাজি ও মুহতাসিকরা ছিলেন। কাজিদের কাজ ছিল ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী শাসন চলছে কিনা তা দেখা, মুহতাসিরা ছিল বাজীরের পরিদর্শক ও নৈতিকতার রক্ষার, শহরগুলিতে নিযুক্ত প্রধান কর্মচারী হলেন কোতোয়াল। তার সততা ও দক্ষতার ওপর নাগরিকদের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা নির্ভরশীল ছিল। তিনি শহরের শান্তিরক্ষার জন্য মহলদার নিয়োগ করতেন।

শহরে কোতয়ালের প্রদান দায়িত্ব ছিল শহরে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা। অন্যান্য দায়িত্ব হল রাজস্ব স্থাপন ও সংগ্রহ, রাজার নিয়ন্ত্রণ এবং শহরের নৈতিক জীবনের ওপর নজর রাখা, শহরের অধিবাসীদের জীবনযাত্রার মান এবং আয়-ব্যয়ের খবর রাখার জন্য কোতোয়াল ‘মীর-ই-মহল’ নামে কর্মচারী নিয়োগ করতেন।

কোতোয়াল সম্পর্কে শহরবাসীদের মনে ভয় ও বিতৃয়ার সৃষ্টি হয়েছিল। এর কারণ কোতোয়াল ও তার সহকারীরা হতো অত্যাচারী ও শোষক। মোঘল যুগের শহরগুলিতে বিদ্রোহ ও দাঙ্গা হতো। খোদ দিল্লিতে প্রতিবাদ ও দাঙ্গার ঘটনা বিরল ছিল না। মহামারী দেখা দিলে বহু মানুষ মারা যেত, অনেকে ভয়ে শহর ছেড়ে পালিয়ে যেত। মোঘল সাম্রাজ্যের যত দিন সমৃদ্ধি ছিল, মোঘলদের নগরগুলিও এগিয়ে গিয়েছিল। কেন্দ্রীয় শাসনের পতন শুরু হলে শহরের জীবনের ওপর তার কালোছায়া পড়েছিল।

Leave a reply