Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

Add question

ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকা হস্তক্ষেপ করেছিল কেন?

ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকা হস্তক্ষেপ করেছিল কেন?

বিশ্বকে কমিউনিস্ট প্রভাবমুক্ত করার লক্ষ্যে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনাম যুদ্ধে নিজেকে জড়ায়। প্রথমদিকে আড়ালে থেকে আমেরিকা উত্তর ও দক্ষিণ ভিয়েতনামের মধ্যে গৃহযুদ্ধ বাধানােয় মদত দেয়। কিন্তু যখন সাম্যবাদী চিন ও – সােভিয়েত রাশিয়া হাে-চি-মিনের নেতৃত্বাধীন উত্তর ভিয়েতনামকে মদত দিতে শুরু করে তখন আমেরিকা সরাসরি ভিয়েতনাম সমস্যায় হস্তক্ষেপ করে। ফরাসি উপনিবেশ বিরােধী ও সাম্যবাদ বিরােধী নেতা ন-দিন-দিয়েমকে দক্ষিণ ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতি মনােনীত করে ভিয়েতনামের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নিজেকে জড়িয়ে নেয়। তদানীন্তন মার্কিন বিদেশমন্তরী জন ফস্টার ডালেস বলেছিলেন, মুক্ত পৃথিবীর মানুষকে কমিউনিস্টদের হাত থেকে রক্ষা করার দায়িত্ব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরই।

ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকা হস্তক্ষেপের কারণ

ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকা যােগ দিয়েছিল কিছু স্বার্থ চরিতার্থ করার লক্ষ্যে।

সাম্যবাদ রােধ

প্রথমে সােভিয়েত রাশিয়ার নেতৃত্বে ও পরে চিনের মদতে সমগ্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া জুড়ে সাম্যবাদের প্রসার ঘটতে থাকে। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র সবসময় চেয়েছে সাম্যবাদের প্রভাব রােধ করতে। তাই আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র বেষ্টনী নীতি অনুসরণ করে দক্ষিণ ভিয়েতনামকে কমিউনিস্টদের প্রভাব থেকে মুক্ত করতে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কমিউনিস্ট প্রভাবকে সংযত রাখতে চেয়েছিল।

পুঁজিবাদের প্রসার

পুঁজিবাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চেয়েছিল ধনতন্ত্রের প্রয়ােগ ও বিকাশ ঘটিয়ে বিশ্ব অর্থনীতিকে নিজের অনুকূলে আনতে। তাই আন্তর্জাতিক বাজার তৈরির জন্য পুঁজিবাদের সম্প্রসারণের লক্ষ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সমস্যাগুলিতে হস্তক্ষেপ করতে শুরু করে। এরই রেশ ধরে ভিয়েতনামের যুদ্ধে আমেরিকা অংশ নেয়।

ঠান্ডা যুদ্ধের নিয়ন্ত্রক

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সমগ্র বিশ্ব সােভিয়েত নেতৃত্বাধীন সাম্যবাদী জোট ও মার্কিন নেতৃত্বাধীন পুঁজিবাদী জোট এই দুভাগে ভাগ হয়ে যায়। বিশ্বরাজনীতির এই দ্বিমেরুকরণের ফলে যে ঠান্ডা লড়াইয়ের সূচনা ঘটে তার মূল নিয়ন্ত্রক হতে চেয়েছিল আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র। এই ঠান্ডা লড়াইয়ের রেশ ছড়িয়ে পড়েছিল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভিয়েতনাম সংকটকে কেন্দ্র করে।

তৃতীয় বিশ্বে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে ইউরােপের মতই এশিয়ারও বিভিন্ন দেশ প্রত্যক্ষ বা পরােক্ষভাবে কমবেশি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। যুদ্ধান্তে এশিয়ার দেশগুলিকে অর্থ-সাহায্যের নামে শুরু হয় মার্কিন কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভিয়েতনাম সমস্যা আমেরিকাকে তৃতীয় বিশ্বে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার সুযােগ এনে দেয়।

উপসংহার

অনাবশ্যক, অর্থহীন যুদ্ধে মার্কিন যুবসমাজ স্বতঃস্ফূর্তভাবে যােগ দিতে চায়নি। তাই সমগ্র আমেরিকা জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনাম যুদ্ধে নিজেকে জড়িয়ে ফেললেও শেষপর্যন্ত প্যারিস শান্তি বৈঠকের মাধ্যমে এক যুদ্ধবিরতি চুক্তি (১৯৭৩ খ্রি.) সম্পাদিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ ভিয়েতনাম থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। উত্তর ও দক্ষিণ ভিয়েতনাম ঐক্যবদ্ধ স্বাধীন রাষ্ট্ররূপে আত্মপ্রকাশ করে।

Read More

Leave a reply