Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

Add question

ভারতে ক্ষমতা হস্তান্তরের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতিক্রমশঃ অশান্ত হয়ে ওঠে। ক্রিপস্ মিশনের ব্যর্থতা, ৪২-এর আগষ্ট আন্দোলন ও আজাদ-হিন্দ বাহিনীর অভিযান প্রভৃতি ঘটনাবলী সাম্রাজ্যবাদী শাসনের অবসানকে অবশ্যম্ভাবী করে তােলে। এর পরিণতি স্বরূপ ব্রিটিশ সরকার ক্ষমতা হস্তান্তরে সচেষ্ট হন।

ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়ার সূচনা

১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল মাসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান হল। কিন্তু যুদ্ধাবসানে ভারতীয় রাজনীতিতে অস্থিরতা ও অচলাবস্থা দেখা দেয়। অশান্ত ভারতের সমস্যা সমাধানের জন্য বড়লাট লর্ড ওয়াভেল এক পরিকল্পনার কথা ঘােষণা করেন (৩১ শে মে, ১৯৪৫)। ওয়াভেল তাঁর পরিকল্পনায় বলেন-

ক) ভারতীয় প্রতিনিধিদের নিয়ে অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠিত হবে।
খ) ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে প্রতিরক্ষা ও সামরিক দায়িত্ব ব্রিটিশের হাতে থাকবে।
গ) বড়লাটের কার্যনির্বাহী পরিষদে মুসলিম ও বর্ণহিন্দু সদস্য সমানুপাতিক হবে।
ঘ) পরিষদের সব সদস্যই হবে ভারতীয়, কেবলমাত্র বড়লাট ও প্রধান সেনাপতি হবে ইংরেজ। এই প্রস্তাবগুলি নিয়ে আলােচনার জন্য ওয়াভেল সিমলাতে এক সর্বদলীয় বৈঠক ডাকেন। কিন্তু মুসলীম লীগ ওই বৈঠক বয়কট করায় সিমলা বৈঠক ব্যর্থ হয়।

লালকেল্লায় ঐতিহাসিক বিচার

লালকেল্লায় অনুষ্ঠিত আজাদ হিন্দ বাহিনীর ধৃত অফিসারদের বিচারকে কেন্দ্র করে সমগ্র ভারতে এক প্রচন্ড বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু হয়। যুদ্ধোত্তর গণবিক্ষোভের সর্বাধিক উল্লেখযাে ঘটনা হল মুম্বাই-এর তলােয়ার জাহাজের নৌ-বিদ্রোহ (১৮ই ফেব্রুয়ারী, ১৯৪৬)।

মন্ত্রীমিশন

নৌবিদ্রোহের অগ্রগতি লক্ষ্য করে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এটলী ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস, এ.ভি, আলেকজান্ডার ও পেথিক লরেন্সকে নিয়ে গঠিত মন্ত্ৰীমিশনকে ভারতে পাঠান। এই মিশনের উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ আলােচনা করে কী কী শর্তে ভারতের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যেতে পারে তার উপায় উদ্ভাবন করা। কংগ্রেস মন্ত্রীমিশনের প্রস্তাব গ্রহণ করলেও মুসলিম লীগ তা প্রত্যাখান করে।

সম্প্রদায়িক দাঙ্গা

এই অবস্থায় শুরু হয় ১৯৪৬-৪৭-এর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে জিন্নার দাবি ছিল ‘ভাগ করে ভারত ছাড়াে।। ১৯৪৬ খ্রিঃ ১৬ই আগস্ট জিন্না পাকিস্তান গঠনের জন্য প্রত্যক্ষ সংগ্রামের ডাক দিলে ভারতের সর্বত্র সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়। কলকাতা ও নােয়াখালিতে এই দাঙ্গা এক ভয়াবহ আকার নেয়। সারা দেশে প্রায় ২ লক্ষ লােক মারা যায়।

অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন

১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ২রা সেপ্টেম্বর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রীমিশনের নির্দেশে জওহরলাল নেহেরু ভারতীয় প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন করেন। মুসলিম লীগ এই সরকারে অনেক পরে যােগ দেয় এবং ক্রমাগত বাধা সৃষ্টির ফলে অচলাবস্থা দেখা দেয়।

মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা ও ক্ষমতা হস্তান্তর

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ২০ শে ফেব্রুয়ারী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্লিমেন্ট এটলি ঘােষণা করেন যে, ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসের মধ্যে ব্রিটিশ ভারতের কোনাে রাজনৈতিক দলের হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়ে এদেশ ত্যাগ করবে। তাই ১৯৪৭ খ্রিঃ মার্চ মাসে লর্ড মাউন্ডব্যাটেন ভারতে আসেন এবং সাম্প্রদায়িক সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে কংগ্রেসকে দেশভাগ মেনে নিতে বলেন। অবশেষে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ১৯৪৭ খ্রিঃ ১৮ই জুলাই ভারতীয় স্বাধীনতা আইন পাস করলে লর্ড মাউন্টব্যাটেন ক্ষমতা হস্তান্তরের পর্ব শেষ করেন। ১৪ই আগস্ট পাকিস্তান ও ১৫ই আগস্ট ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ করে।

Download PDF

Please wait..
If the download didn’t start automatically, click here.

Leave a reply