Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

Add question

ভারতে কীরূপ বৈচিত্র দেখা যায়? বৈচিত্র্যের মধ্যে ভারতে কীভাবে ঐক্য বিরাজ করেছে?

ভারতে কীরূপ বৈচিত্র দেখা যায়? বৈচিত্র্যের মধ্যে ভারতে কীভাবে ঐক্য বিরাজ করেছে?

ভারত বৈচিত্র্যময় দেশ। বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতে বৈচিত্র্য দেখা যায়। প্রাকৃতিক দিক দিয়ে এখানে যেমন হিমালয় ও বিন্ধ্য পর্বতমালা রয়েছে, তেমনই রয়েছে ‘গঙ্গা, যমুনা, সিন্দু, ব্রহ্মপুত্র বিধৌত সমভূমি। একদিকে রয়েছে গহন অরণ্য ও অন্যদিকে থর মরুভূমি এবং বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরের মতাে বিশাল জলরাশি। রয়েছে জনগােষ্ঠীর বৈচিত্র্য। আর্য, দ্রাবিড়, শক, হুন, উপজাতির রক্তস্রোত ভারতবাসীর শিরায় শিরায় বয়ে চলেছে। ভারতে হিন্দু, ইসলাম, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, জুরাঘুষ্ট্র প্রভৃতি বিভিন্ন ধর্মমত দেখা যায়।  রয়েছে সংস্কৃত, দ্রাবিড়, বাংলা, হিন্দি, ফারসি, তামিল, তেলেগু, মালয়ালাম প্রভৃতি শতাধিক ভাষা। এক কথায় ভারতের প্রতিটি ক্ষেত্রেই বৈচিত্র্য লক্ষ করা যায়।

সমন্বয়বাদী ঐক্য

এত বৈচিত্র্য থাকা স্বত্ত্বেও ঐক্যের মিলন ভারতবর্ষকে ঐতিহ্যমণ্ডিত করে তুলেছে। ড. স্মিথ যথার্থই বলেছেন “India offers unity in diversity.” ঐক্যবােধ বিভিন্ন দিক দিয়ে গড়ে উঠেছে।

ভৌগলিক ঐক্য

বিষ্ণু পুরাণে বলা হয়েছে যে দেশ সমুদ্রের উত্তরে ও হিমালয়ের দক্ষিণে অবস্থিত, সে দেশের নাম ‘ভারত এবং সেখানে যারা বাস করেন তারা ভারত সন্ততি নামে পরিচিত। এই নামকরণ ভৌগােলিক ঐক্যবােধের প্রতীক।

ধর্মীয় ঐক্য

ভারতের হিন্দু সভ্যতা ও সংস্কৃতি বৃহত্তর জনসাধারণের মধ্যে ঐক্য গ্রথিত করেছে। ভারতের প্রাচীন দুই মহাকাব্য রামায়ণ ও মহাভারত ভারতবাসীকে ধর্মপ্রাণতায় উদ সঙ্গ করে। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে তীর্থক্ষেত্রগুলি দেবদেবীর মন্দিরগুলি ধর্মীয় ঐক্য গড়ে তুলতে সহায়তা করেছে।

ভাষাগত ঐক্য

ভারতে বিভিন্ন ভাষা লক্ষ করা যায়। কিন্তু ভাষাতত্ত্ব বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, উত্তর ভারতের ভাষাগুলির উৎপত্তিস্থল যেমন সংস্কৃত ভাষা তেমনই দক্ষিণ ভারতীয় ভাষাগুলি সৃষ্টি হয়েছে দ্রাবিড় ভাষা থেকে।

জাতিগত ঐক্য

আর্য-অনার্য মােগল-পাঠান, শক-ক্ষত্ৰপ বিভিন্ন জাতি ভারতে প্রবেশ করে তাদের পৃথক জাতিগত চরিত্র দীর্ঘকাল বজায় রাখতে পারেনি। তারা সবাই মহামানবের সাগর তলে মিশে গেছে। একটিই পরিচয় স্থায়িত্ব লাভ করেছে এবং তা হল ভারতীয় নামক জাতীয়তার ধারণা।

রাজনৈতিক ঐক্য

প্রাচীনকাল থেকেই মহাপদ্মনন্দ, চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য, সমুদ্রগুপ্ত, হর্ষবর্ধন, আলাউদ্দিন খলজি, আকবর প্রমুখ শাসকগণ ক্ষুদ্র রাজ্যগুলিকে জয় করে রাজনৈতিক ঐক্যের প্রতীকস্বরূপ, সাম্রাজ্য গড়ে তােলেন। প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্যেও ‘একরাট, রাজাধিরাজ, সম্রাট প্রভৃতি রাজপদ ও সাম্রাজ্য স্থাপনের প্রমাণ স্বরূপ ‘অশ্বমেধ যজ্ঞ’, ‘রাজসূয় যজ্ঞ প্রভৃতির উল্লেখ পাওয়া যায়। এ থেকে বােঝা যায় যে প্রাচীনকাল থেকেই বিশাল রাজনৈতিক ঐক্যের ধারণা জনগণের মনে গ্রথিত ছিল। এই ধারণা আরও দৃঢ় হয় মােগল যুগের কেন্দ্রীভূত শাসন ও মুদ্রা ব্যবস্থার প্রবর্তন এবং পরবর্তী সময়ে ইংরেজ শাসনের অনুদানে। যদিও ড. অতুল সুর মনে করেন যে এই ঐক্যের বন্ধন অনেকখানি শিথিল হয়ে পড়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার আঘাতে। কিন্তু ড. ভিনসেন্ট স্মিথ মনে করেন। যে ভারতের মৌলিক ঐক্য সুগভীর এবং ভৌগলিক বৈচিত্র্যের অনেক উর্ধ্বে। তাই কবি অতুল প্রসাদের ভাষায় বলা যায়-

নানা ভাষা নানা মত নান পরিধান।
বিবিধের মাঝে দেখাে মিলন মহান।

Leave a reply