ব্যাঙ্ক রেট পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা
কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির অন্যতম একটি পদ্ধতি হলো ব্যাঙ্ক রেট। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ন্যূনতম যে বাট্টার হারে হুণ্ডি বা বিল ভাঙিয়ে অন্যান্য ব্যাঙ্কগুলিকে টাকা দেয়, সেই বাট্টার হারকে ব্যাঙ্ক রেট বলে। এটি হলো কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ঋণ নিয়ন্ত্রণের যেসব পদ্ধতি আছে তাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা দুর্বলতম পদ্ধতি। এই পদ্ধতির কতকগুলি সীমাবদ্ধতা আছে। যেগুলি হলো –
প্রথমত :
অর্থের বাজার উন্নত ও প্রসারিত না হলে এই পদ্ধতিটি বিশেষ কার্যকরী হয় না। ব্যাঙ্ক রেট বৃদ্ধি পেলে বাজারের সুদের হারও বৃদ্ধি পাবে এবং ব্যাঙ্ক রেট হ্রাস পেলে বাজারের সুদের হারও হ্রাস পাবে। অর্থাৎ বাজার অনুন্নত হলে ব্যাঙ্ক রেট এবং বাজারের সুদের হারের মধ্যে এই ঘনিষ্ঠ এবং প্রত্যক্ষ সম্পর্ক নাও থাকতে পারে। তখন ব্যাঙ্ক রেটের পরিবর্তনের দ্বারা ঋণের যোগানের নিয়ন্ত্রণ বিশেষ সাফল্য লাভ করে না।
দ্বিতীয়ত :
ব্যাঙ্ক রেটের কার্যকারিতা অর্থনৈতিক ব্যবস্থার স্থিতিস্থাপকতার উপর নির্ভর করে। অনুন্নত অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় যেখানে টাকার বাজার ভালো গড়ে ওঠেনি সেই অর্থ ব্যবস্থায় ব্যাঙ্ক রেট খুব ভালোভাবে কার্যকরী হয় না।
তৃতীয়ত :
যখন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ব্যাঙ্ক রেট বাড়িয়ে দিচ্ছে তখন বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে তাদের নিজেদের সুদের হার বাড়াতেই হবে এরূপ কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। কাজেই ব্যাঙ্ক রেট পরিবর্তিত হওয়ার ফলে বাজারে সুদের হার পরিবর্তিত নাও হতে পারে। এতে ব্যাঙ্ক রেট পদ্ধতির মূল উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হতে পারে।
চতুর্থত :
ব্যাঙ্ক রেট পদ্ধতির সাফল্য ব্যবসায়িক প্রত্যাশার রও নির্ভর করে। ব্যবসায় খুব তেজি ভাব থাকার সময় সামান্য পরিমাণ সুদের হার বাড়িয়ে দেওয়া হলে ব্যবসায়ীরা ঋণ নেওয়া বন্ধ করে না। এরূপ অবস্থায় ব্যাঙ্ক রেট বৃদ্ধি করে ঋণের চাহিদা হ্রাস করা যায়। তাই লর্ড কেইন্স ‘ঋণ নিয়ন্ত্রণের একটি অকার্যকর পদ্ধতি হিসাবে ব্যাঙ্ক রেট পদ্ধতিকে চিহ্নিত করেছেন।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .