বাণিজ্য উদবৃত্ত ও লেনদেন উদবৃত্তের মধ্যে পার্থক্য
বাণিজ্য উদ্বৃত্ত (BTO) এবং লেনদেন উদ্বৃত্ত (BOP) -এই দুটি ভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়। এই দু’টি ধারণার মধ্যে কয়েকটি পার্থক্য দেখানাে যেতে পারে।
1. কোনাে একটি নির্দিষ্ট বছরে একটি দেশের সঙ্গে পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলির সবরকমের দৃশ্য রপ্তানি ও দৃশ্য আমদানির ধারাবাহিক হিসাবকে ওই দেশের ওই সময়ের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত বলে।
অন্যদিকে, কোনাে একটি নির্দিষ্ট আর্থিক বছরে পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলির সব রকমের অর্থনৈতিক লেনদেনের ধারাবাহিক হিসাবকে ওই দেশের ওই সময়ের লেনদেন বলে।
2. বাণিজ্য উদ্বৃত্তে একটি দেশের শুধুমাত্র চলতি খাতের দৃশ্য রপ্তানি ও দৃশ্য আমদানির পাওনা ও দেনার হিসাবটি প্রকাশ পায়।
অন্যদিকে, লেনদেন উত্তে একটি দেশের চলতি ও মূলধনি খাতের পাওনা ও দেনার হিসাব দেখানাে হয়, যা হিসাবশাস্ত্রীয় মতে পরস্পর সমান হয়। বাণিজ্য উত্তে দেনা ও পাওনার হিসাব কখনাে কখনাে পরস্পর সমান হয়।
3. বাণিজ্য উদ্বৃত্ত একটি খণ্ড বা আংশিক বিষয়।
অন্যদিকে, লেনদেন উদ্বৃত্ত একটি অখণ্ড বা বৈদেশিক বাণিজ্যের একটি সমগ্র অংশ।
4. বাণিজ্য উদ্বৃত্ত প্রত্যক্ষভাবে জাতীয় আয়কে প্রভাবিত করে।
অন্যদিকে, লেনদেন উদ্বৃত্ত ঋণের সঙ্গে যুক্ত থাকে, কারণ লেনদেন উদবৃত্ত দেশের দায় (Liability) গ্রহণ করে। এর মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা প্রতিফলিত হয়।
5. বাণিজ্য উদ্বৃত্তে দৃশ্য রপ্তানি ও দৃশ্য আমদানির অর্থমূল্যের পার্থক্যকে দৃশ্য বাণিজ্যের উদ্বৃত্ত বলে।
অন্যদিকে, লেনদেন উদ্বৃত্তে চলতি খাতের পাওনার দিকে দৃশ্য রপ্তানি, অদৃশ্য রপ্তানি, প্রতিদানহীন পাওনা এবং দেনার হিসাবে দৃশ্য আমদানি, অদৃশ্য আমদানি এবং প্রতিদানহীন দেনা অন্তর্ভুক্ত থাকে এবং মূলধনি খাতে পাওনার হিসাবে মূলধনি পাওনা এবং দেনার হিসাবে মূলধনি দেনা অন্তর্ভুক্ত থাকে।
পরিশেষে, কোনাে দেশের বাণিজ্য উত্তের হিসাব অনুকূল হলেও লেনদেন উবৃত্তের হিসাব প্রতিকুল হতে পারে। অন্যদিকে, লেনদেন উত্তের ঘাটতি হলেও লেনদেন উত্ততে ভারসাম্য বজায় থাকতে পারে বা উদ্বৃত্ত থাকতে পারে। বাণিজ্য উদ্বৃত্ত হলাে বৈদেশিক বাণিজ্যের একটি অসম্পূর্ণ চিত্র, কিন্তু লেনদেন উদ্বৃত্ত হলাে বৈদেশিক বাণিজ্যের দেনা-পাওনার একটি সম্পূর্ণ চিত্র।
Read More
- সমক পার্থক্য এর সংজ্ঞা দাও।
- লরেঞ্জ রেখা বলতে কী বােঝাে?
- লরেঞ্জ অনুপাত কাকে বলে?
- সমক পার্থক্যের সুবিধা ও অসুবিধা লেখো।
- লরেঞ্জ রেখার সাহায্যে আয় বৈষম্য কীভাবে পরিমাপ করা যায় তা ব্যাখ্যা করো।
- লেনদেন ব্যালেন্সে ঘাটতি কীভাবে দূর করা যায় ?
- চলতি খাত ও মূলধনি খাতের বৈশিষ্ট্য আলােচনা করাে।
- লেনদেন হিসাবের চলতি ও মূলধনি খাতের মধ্যে পার্থক্য দেখাও।
- “লেনদেন ব্যালেন্সে সবসময় সমতা থাকে।” – উক্তিটি ব্যাখ্যা করাে।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .