বহুপতীত্ব বিবাহের কারণ
বিবাহ একটি স্বীকৃত সামাজিক অনুষ্ঠান যার মাধ্যমে স্ত্রী ও পুরুষ তাদের যৌন সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করার ও সন্তান সন্ততি উৎপাদনের স্বীকৃতি পায়। যৌন সম্পর্কের ভিত্তিতে বিবাহ প্রথা দুটি ভাগে বিভক্ত—একগামী ও বহুগামী। বহুবিবাহে এক পুরুষ বা নারীর সাথে বহু নারী বা পুরুষের সম্বন্ধ স্থাপিত হয়। বহুবিবাহ আবার দু প্রকারের হতে পারে—বহুপত্নীক বা বহুস্বামীক বিবাহ প্রথা। বহুপত্নীক বিবাহ ব্যবস্থায় এক পুরুষের সাথে বহু স্ত্রী বাস করে; বহুস্বামীক ব্যবস্থায় এক নারীর সাথে বহু স্বামী বাস করে।
বহুপত্নীক (polygamy) বিবাহ প্রথায় একজন পুরুষের সাথে বহু স্ত্রী বাস করে। কোন সমাজে নারীর সংখ্যা পুরষের চেয়ে অনেক বেশি হলে বহুপত্নীক ব্যবস্থা প্রচলতি হয়। মধ্যযুগীয় ফিউডাল ব্যবস্থায় পরিবারের প্রধান স্ত্রীকে নিজের সম্পত্তি বলে মনে করত এবং একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করত। রাজা-রাজড়ারা, জমিদাররা বহুবিবাহ করত এবং এটিকে আভিজাত্যের নিদর্শন বলে মনে করেন। অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক কারণে রাজারা একাধিক বিবাহ করত। যদি কোন স্ত্রীর পুত্র সন্তান না হয় এবং হবার সম্ভাবনা না থাকে সে বংশ রক্ষার্থে দ্বিতীয় বিবাহ করত। ইসলাম ধর্মে এক পুরুষের চারটি স্ত্রী গ্রহণ করা আইন ও ধর্মসিদ্ধ, যদিও এর বিপরীতটি আদৌ সিদ্ধ নয়। এই প্রথার মূল লক্ষ্য মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধি।
বহুপত্নীক বিবাহে স্ত্রীর আত্মমর্যাদা থাকে না, তাদের মধ্যে হতাশা দেখা দেয়। ফলে পরিবারের মধ্যে সংহতির অভাব দেখা দেয়, পরিবারের প্রতি স্ত্রীর দায়বদ্ধতা কমে যায়। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে আন্তরিক বন্ধন থাকে না, পরিবারের সন্তানরা অবহেলিত হয়। আজ পৃথিবীতে হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্ট ধর্ম কোথাও বহুপত্নীক বিবাহ বা বহুবিবাহ আইনগতভাবে সিদ্ধ রূপে স্বীকৃত হয় না। একমাত্র মুসলমান সমাজে এটি ধর্মীয় সমর্থন পুষ্ট ব্যবস্থা। নিঃসন্দেহে এটি ধর্মের শ্রেষ্ঠত্বের নিদর্শন নয়।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .