বহুগামী বিবাহ ব্যবস্থা
বিবাহ প্রথাকে সাধারণতঃ দুভাগে বিভক্ত করা হয়—একগামী বিবাহ (Monogamy) ও বহুগামী বিবাহ বা বহুবিবাহ (Polygamy)। প্রথমটিতে, একজন পুরুষ ও একজন স্ত্রীলোক একত্রে বসবাস করে অর্থাৎ যৌন সম্পর্ক একজন পুরুষ ও একজন স্ত্রীলোকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। অপরপক্ষে বহুবিবাহ প্রথায় যৌন সম্পর্ক একাধিক নারী ও পুরুষের মধ্যে থাকে—একজন নারী বহু পুরুষের সাথে ও একজন পুরুষ বহু নারীর সঙ্গে বসবাস করে।
বহুগামী বিবাহ ব্যাবস্থার প্রকারভেদ
বহুবিবাহ আবার তিন প্রকারের হতে পারে—
- বহুপত্নীক (polygyny)
- বহুপতিত্ব (polyandry)
- গোষ্ঠী বিবাহ (Group Marriage ) ।
(1) বহুপত্নীক বিবাহ ব্যবস্থায় একজন পুরুষ একাধিক নারীর সাথে সহবাস করে। একসময়ে ভারতে এই ব্যবস্থার প্রচলন ছিল, কিন্তু এখন হিন্দু সমাজে এর বিলোপ সাধন করা হয়েছে। কিন্তু মুসলমান সমাজে এক পুরষের আইনত চারজন স্ত্রী থাকতে পারে। কিন্তু স্ত্রীলোকদের এই অধিকার নেই। পুরুষরা আবার এক কথায় অর্থাৎ তিনবার ‘তালাক’ বলে স্ত্রীকে ত্যাগ করতে পারে ও নতুন স্ত্রীকে বিবাহ করতে পারে। এই ব্যবস্থায় নারীদের মর্যাদা হ্রাস পায়।
(2) বহুপতিত্ব বিবাহ (polyandry)— এই ব্যবস্থায় এক স্ত্রী বা মহিলার সাথে বহু পুরুষের বৈবাহিক সম্বন্ধ থাকে। একজন পত্নীর সাথে একাধিক স্বামী বসবাস করে। বহুপতিত্ব বিবাহ ব্যবস্থা দুই প্রকার – সহোদর ভ্রাতৃক (fratenal) ও অসহোদর ভ্রাতৃক (non-fraternal)। মহাভারতে কথিত দ্রৌপদীর সাথে, পঞ্চ পাণ্ডবের বিবাহ সহোদর ভ্রাতৃক কারণ পঞ্চপাণ্ডব ছিলেন পরস্পরের ভাই। তিব্বত, সিকিম, লাডাক প্রভৃতি অঞ্চলে এই সহোদর ভ্রাতৃক বিবাহ প্রচলিত। কিন্তু কোথাও কোথাও, যথা মালাবার অঞ্চলে অসহোদর ভ্রাতৃক প্রথা বিদ্যমান। এখানে পতিগণ পরস্পর পরস্পরের ভ্রাতা, নয়।
(3) গোষ্ঠী বিবাহ (Group, Marriage)—এখানে একাধিক পুরুষের সাথে একাধিক নারীর দাম্পত্য সম্বন্ধ বিরাজ করে। আজকাল এই ব্যবস্থার প্রচলন কোথাও দেখা যায়। না। প্রাচীন যুগে আদিম সমাজে মানুষ যখন গোষ্ঠীবদ্ধ ভাবে বাস করত তখন গোষ্ঠীবিবাহ প্রচলিত ছিল।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .