বনভূমির হ্রাস নিয়ন্ত্রণ বা বনসম্পদ সংরক্ষণ
বনসম্পদ সংরক্ষণ করা ও বনভূমির হ্রাস নিয়ন্ত্রণ করার প্রধান উপায়গুলি হল-
বনসৃজন
চিরাচরিত বা উন্নত পদ্ধতিতে বনভূমি সৃষ্টি করে, বৃক্ষরোপণ করে বনসম্পদের জোগান অব্যাহত রাখা যায়। যেমন— যৌথ বন ব্যবস্থাপনা (Joint Forest Management) পদ্ধতি, কৃষি বনসৃজন, সামাজিক বনসৃজন পদ্ধতি।
নিয়ন্ত্রিত পশুচারণ
ছাগল, মেষ প্রভৃতি চারণ করানোর জন্য পশুচারণ ক্ষেত্র নির্দিষ্ট করা দরকার।
উপযুক্ত ভূমি ব্যবহার ব্যবস্থার প্রবর্তন
জমির অবস্থান, মাটির চরিত্র এবং জমির অন্যান্য বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী জমিকে পরিকল্পনা অনুসারে বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত করে, জমির ব্যবহার (land use) নির্দিষ্ট করা দরকার।
পতিত জমিতে বনসৃজন
এই পদ্ধতিতে শুধু যে জমির উপযোগিতা বৃদ্ধি পায় তাই নয়, পতিত জমি (Wasteland) থেকে উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ানো যায়। জমির অর্থনৈতিক মান উন্নত হয়।
কীটপতঙ্গ এবং রোগ নিবারণ
কীটপতঙ্গের আক্রমণে প্রতি বছর সারা পৃথিবীতে বনভূমির ব্যাপক ক্ষতি হয়। উদ্ভিজ্জের সুরক্ষার জন্য কীটপতঙ্গ, রোগ প্রতিহত করা দরকার।
হ্যাবিট্যাট সংরক্ষণ ও খাদ্যের জোগান
সংরক্ষিত বনভূমি, অভয়ারণ্য, মৃগদাব প্রভৃতি গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশ-বিদেশে উদ্ভিজ্জ ও অরণ্য সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
সুলভ পরিবেশবান্ধব জ্বালানির বন্দোবস্ত
সুলভ ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানির বন্দোবস্ত করে বিকাশশীল দেশগুলিতে জনসাধারণকে কাঠের মতো সহজ সস্তা জ্বালানি ব্যবহার করা থেকে বিরত করা যায়। ফলে বনভূমি ধ্বংস হওয়ার হার কমে।
উপযুক্ত তত্ত্বাবধান
বনভূমি সংরক্ষণের কাজ সঠিকভাবে তত্ত্বাবধান করা দরকার। এ ব্যাপারে পুলিশ, প্রশাসন ও বনরক্ষকদের মধ্যে সঠিক সংযোগ গড়ে তোলা প্রয়োজন।
কাঠের বিকল্পের সন্ধান
উপযুক্ত বিকল্প ছাড়া কাঠের ব্যবহার কিছুতেই কমানো যায় না। সুতরাং কাঠের কার্যকর বিকল্প চাই যা উপভোক্তা ও পরিবেশ উপযোগী হবে।
অপচয় কমানো ও নিয়ন্ত্রিতভাবে কাঠ কাটা
কাঠ ও কাঠজাত সম্পদের অপচয় নিবারণ করে স্বাভাবিক উদ্ভিজ্জ ও বনভূমিকে ধ্বংস হওয়ার হাত থেকে বাঁচানো যায়।
দাবানল নিয়ন্ত্রণ
দাবানলের মতো ব্যাপক প্রাকৃতিক বিপর্যয় নিয়ন্ত্রণ করে বনভূমি সংরক্ষণ করা যায়। এ কাজে মহাকাশে স্থাপিত হওয়া কৃত্রিম উপগ্রহগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .