ফরাজী আন্দোলনের প্রকৃতি
ফরাজী আন্দোলনের চরিত্র সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ আছে। ড, অভিজিৎ দত্তর মতে, ফরাজী আন্দোলন নিশ্চিতভাবে ছিল ইংরেজ বিরােধী। সরকারি আইন ও বিচার বিভাগকে অস্বীকার করে তারা বাংলা থেকে ইংরেজ বিতাড়নের বার্তা ছাড়ায়। ইসলাম ধর্মের পুনরুজ্জীবনের লক্ষ্য নিয়েই ফরাজী। আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। অর্থনৈতিক দিক থেকে বিচার করলে এই আন্দোলন সামন্ততন্ত্র বিরােধী মনে হতে পারে সমাজের প্রচলিত ধর্মবিশ্বাসের বিরােধিতা করে যে ফরাজী আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটেছিল তা ধীরে ধীরে সাম্প্রদায়িক চরিত্র ধারণ করেছিল।
নরহরি কবিরাজ মনে করেন যে, “ফরাজী আন্দোলনের সাথে ধর্মের যােগ থাকলেও, তা মূলতঃ ছিল একটি কৃষক আন্দোলন।” ড. বিনয় ভূষণ চৌধুরীর মতে, “এই আন্দোলন ধর্মীয় আন্দোলন থেকে কৃষক আন্দোলনে পরিণত হলেও তারা জমিদারী প্রথা বা নীলচাষের বিলােপ চায়নি। তাদের ব্রিটিশ বিরােধিতা ছিল অস্পষ্ট ও ধোঁয়াটে।”
কিন্তু ড. অভিজিত দত্ত ফরাজী আন্দোলনকে ইংরেজ বিরােধী বলেছেন। তার মতে, ইংরেজদের বিচার বিভাগ ও আইন বিভাগকে ফরাজীরা অস্বীকার করেছিল। শশীভূষণ চৌধুরীও ফরাজী আন্দোলনের জনপ্রিয়তার কথা বলেছেন। যেহেতু ধর্মের ভিত্তিতে ফরাজী আন্দোলন গড়ে উঠেছিল এবং পরবর্তীকালে এর মধ্যে সাম্প্রদায়িক প্রবণতা লক্ষ করা যায় বলে মনে করেন ড. বিনয়কৃয় চৌধুরী। সুপ্রকাশ রায় তার ভারতের কৃষক বিদ্রোহ ও গণতান্ত্রিক সংগ্রাম’ গ্রন্থে মন্তব্য করেছেন যে, “ফরাজী আন্দোলন জনসাধারণের প্রকৃত স্বাধীনতা সংগ্রামের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক রূপ দান করেছিল।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .