Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

Add question

প্রাক্-স্বাধীনতা যুগে নারী শিক্ষার প্রসার সম্পর্কে একটি নিবন্ধ লেখ।

প্রাক্-স্বাধীনতা যুগে নারী শিক্ষার প্রসার সম্পর্কে একটি নিবন্ধ লেখ।

প্রাক্-স্বাধীনতা যুগে নারী শিক্ষার প্রসার

আমরা আগের এককে দেখেছি যে ভারতের ইতিহাসে, এক সময় নারী সমাজ যথেষ্ট সম্মানীয় জায়গায় ছিল। তখন তার জন্য শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ সমাজ খুলে রেখেছিল। একজন তৎকালীন পুরুষের মত নারীও সব রকম শিক্ষা গ্রহণ করতে পারত, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে অংশগ্রহণ করতে পারত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে রাজনৈতিক এবং আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন দেখা দিল। এর প্রভাব পড়ল গিয়ে নারী শিক্ষা ও নারীর সামাজিক অবস্থানে। মধ্যযুগে কিছু ব্যতিক্রম বাদে, সাধারণ নারীদের শিক্ষার সুযোগ প্রায় উঠে গিয়েছিল। টোল এবং চতুষ্পাঠীর দরজা তাদের জন্য বন্ধ ছিল।

মিশনারিরা আবার নতুন করে ভারতীয় নারীকে শিক্ষার আলো দেখাবার চেষ্টা শুরু করলেন। ১৯১৩ সালের চার্টার অ্যাক্ট-এর মধ্য দিয়ে সরকার (ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি) ও ধীরে ধীরে শিক্ষার ক্ষেত্রে কিছুটা দায়িত্ব নিতে আরম্ভ করল। আলোচনার সুবিধার্থে আমরা এই সময়ের নারী শিক্ষাকে দুটি দিক দিয়ে দেখব—মিশনারিদের ভূমিকা এবং ব্রিটিশ সরকারের ভূমিকার দিক দিয়ে।

মিশনারিদের অবদান

মিশনারীদের শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল নারী শিক্ষা। শিক্ষার ইতিহাসে ১৭৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত “হেজেস্ গার্লস স্কুল” এর উল্লেখ দেখা যায়। সম্ভবত সেটিই প্রথম মেয়েদের স্কুল। কিন্তু এই সম্বন্ধে বিশদ বিবরণ পাওয়া যায়নি। মনে হয় স্কুলটি স্থায়ীও হয়নি। লন্ডন সোসাইটির রেভারেন্ড মে ১৮১৮ সালে চুঁচড়াতে একটি মেয়েদের জন্য বিদ্যালয় স্থাপন করে নারী শিক্ষার পথ দেখানো শুরু করেছিলেন। ১৮১৯ সালে উইলিয়াম কেরী শ্রীরামপুরে একটি মেয়েদের বিদ্যালয় স্থাপন করেন। ১৮২০ সালে “ক্যালকাটা ফিমেল জুভেনাইল সোসাইটি” ১৮টি স্কুল স্থাপন করে। পরবর্তী পর্যায় মিস কুক ১৮২১ সালে ৮টি এবং ১৮২২ সালে আরো ৪টি বিদ্যালয় স্থাপন করেন। এই বিদ্যালয়গুলির পাঠ্যক্রমে লেখা, পড়া, অঙ্ক, ইতিহাস, ভূগোল এবং সেলাই শেখানো হত। ১৯২৪ সালে “লেডিস সোসাইটি ফর নেটিভ ফিমেল এডুকেশন” স্থাপিত হয়। ১৮২৬ সালে মিস কুক (যিনি তখন বিবাহ সূত্রে মিসেস উইল্সন নামে পরিচিত হয়েছেন) রাজা বৈদ্যনাথের দেওয়া ২০,০০০ টাকা দিয়ে “সেন্ট্রাল স্কুল” স্থাপন করেন। সেখান মহিলা শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণও আরম্ভ হয়।

সেই সময় ১৮২১ সালে, মাদ্রাজে প্রথম মেয়েদের বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। ১৮০০- শতকের মাঝামাঝি সময় মেয়েদের বিদ্যালয়ের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় সাতে।

বম্বেতে প্রথম নারী বিদ্যালয় স্থাপিত হয় ১৯২৪ সালে। দশ বছরে সেই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ১০টি বিদ্যালয়ে। উত্তর ভারতের নানা জায়গায় নারী শিক্ষা কেন্দ্র গঠিত হতে লাগল। ১৯৩৫ সাল নাগাদ তখনকার অবিভক্ত বাংলাদেশে কয়েকটি জেলা ও বর্ধিষ্ণু অঞ্চলে যেমন বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম, মুরশিবাদ, কৃষ্ণনগর, উত্তরপাড়া, বারাসাত, হাওড়া, খুলনা যশোর, চট্টগ্রাম ইত্যাদি জায়গায়ও নারী শিক্ষাকেন্দ্র ছিল। ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলায় নবজাগরণের যুগে স্ত্রী শিক্ষার ক্ষেত্রে এক বিরাট পরিবর্তন দেখা দেয়। পর্দা প্রথার বিলোপ হয়, মেয়েদের শিক্ষা, সমাজ, সংস্কৃতি এবং রাজনীতির ক্ষেত্রে অংশ নিতে আগ্রহ দেখা যায়। ভারতীয় শিক্ষাব্রতী রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রাধাকান্ত দেব প্রভৃতিরা এগিয়ে আসেন। রাধাকান্ত দেব কলকাতার শোভাবাজারে মেয়েদের জন্য একটি বিদ্যালয় স্থাপন করেন। প্যারীচাঁদ মিত্র এবং রাধানাথ শিকদার স্ত্রী শিক্ষার জন্য একটি মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেন।

কলকাতায় ১৮৪৯ সালে ড্রিঙ্ক ওয়াটার বেথুন এবং দক্ষিণারঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রভৃতি শিক্ষাবিদ বাঙালির চেষ্টায় “হিন্দু বালিকা বিদ্যালয়” প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৮৭ খ্রিঃ এই স্কুল বেথুন কলেজে রূপান্তরিত হয়। স্কটিশ মিশনের রেভারেন্ড অ্যালেক্সান্ডার ডাফ বেশ কিছু মহিলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন— যেমন “সেন্ট মার্গারেট স্কুল”, “ডাফ স্কুল”, “হোলি চাইল্ড স্কুল”, ‘ক্রাইস্ট চার্চ স্কুল” ইত্যাদি।

বাংলার বাইরেও একই চিত্র দেখা যেতে লাগল। যেমন মহাত্মা ফুলে পুনেতে নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করেছিলেন। এ ছাড়াও আহমেদাবাদ, বম্বে ইত্যাদি জায়গায় অনেক নারী শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপিত হয়। মিশনারিদের দ্বারা স্থাপিত বেশিরভাগ শিক্ষাকেন্দ্রই ধর্মীয় শিক্ষা দান করত। যদিও এইসব স্কুলে মাতৃভাষাকে মাধ্যম রূপে গ্রহণ করা ইংরেজি ভাষা শিক্ষাও দেওয়া হত। তবে যে সব বিদ্যালয়গুলি ভারতীয়দের দ্বারা গঠিত যেমন বম্বেতে জগন্নাথ শঙ্কর শেঠের গঠিত বা মহাত্মা ফুলে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়গুলিতে ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষাদান করা হত।

ব্রিটিশ সরকার এবং বেসরকারি ভূমিকা

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ১৮১৩ সালের চার্টার অ্যাক্ট ভারতীয় শিক্ষার একটা নতুন গতি ধারা এনে দেয়। তার আগে অবধি ভারতীয়দের শিক্ষার ব্যাপারে সরকার কোনও রকম দায় নেয়নি। সবটাই বেসরকারি উদ্যোগ ছিল, বিশেষ করে মিশনারিদের দ্বারা। ১৮১৩র অ্যাক্টে বলা হল যে, কোম্পানি শিক্ষার দায়িত্ব নেবে না, তবে শিক্ষার প্রসারে উৎসাহ দিতে এক লক্ষ টাকা অনুদান প্রতি বছর দিবে। এর ফলে প্রচুর শিক্ষাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হতে লাগল। এর মধ্যে বেশ কিছু মহিলা শিক্ষাকেন্দ্রও ছিল। ১৮১৩ থেকে ১৮৩৫ পর্যন্ত ভারতীয় শিক্ষার চরিত্র নিয়ে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যবাদীদের মধ্যে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল, তাতে নারী শিক্ষার প্রসঙ্গটি স্বতন্ত্রভাবে বিচার করা হয়নি। কিন্তু ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে মেকলের মিনিট ও পরবর্তীকালে রাজা রামমোহন রায় ও উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক ভারতীয় মেয়েদের সামাজিক অবস্থান পরিবর্তনের যে সূচনা করেছিলেন, তাতে নারীশিক্ষা প্রসারের পথ সুগম হয়েছিল বলা যায়।

১৮৫০-এ, তৎকালীন গভর্নর জেনারেল লর্ড ডালহৌসি বলেছিলেন যে একমাত্র নারী শিক্ষার মাধ্যমেই এ দেশের মানুষের মধ্যে কার্যকরী পরিবর্তন আনা যাবে। তাই তিনি সরকারকে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেবার এবং উৎসাহ দেবার কথা বলেন। এরই প্রতিফলন আমরা দেখতে পাই ১৮৫৪ সালের উড্ ডেস্প্যাচ-এ।

এই উড্ ডেস্প্যাচে প্রথম আর্থিক সাহায্য বা গ্রান্ট-ইন-এড্ দিয়ে নারী শিক্ষা প্রসারে উদ্যোগ নেবার কথা বলা হয়েছিল। তবে এর পরবর্তী সময় ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহ হওয়ার দরুন সরকার সামাজিক ও ধার্মিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ল। এর ফলে সরকারি প্রচেষ্টায় ভাঁটা দেখা দিল।

১৮৭০-১৮৮২ সালের মধ্যে বেশ কিছু নারী শিক্ষা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর বেশিরভাগ টাকাটাই এসেছিল প্রাথমিক শিক্ষাকেন্দ্রের জন্য দেওয়া আর্থিক অনুদানগুলি থেকে।

ইংরেজ সমাজ সংস্কারক মিস মেরী কার্পেন্টার চার বার ভারতে আসেন। তিনি মহিলা শিক্ষিকা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন। তাঁর সরকারি মহলের যোগাযোগগুলিকে কাজে লাগিয়ে ১৮৭০ সালে প্রথম মহিলা প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৮২ সালের মধ্যে মেয়েদের জন্য ২,৬০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৮১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৫টি শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান এবং একটি কলেজ বা মহাবিদ্যালয় স্থাপিত হয়। প্রথম দুই ভারতীয় মহিলা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাধি পেয়েছিলেন তাঁরা তৎকালীন বেথুন স্কুল (এখন যেটি মহাবিদ্যালয়) থেকে পাশ করেছিলেন। সেটি ছিল ১৮৮৩ সাল এবং বিশ্ববিদ্যালয়টি ছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।

১৮৮২-৮৩ সালের ভারতীয় শিক্ষা কমিশন (হান্টার কমিশন) নারী শিক্ষার সম্বন্ধে বেশ কিছু সুপারিশ করে। যেমন, মেয়েদের বিদ্যালয় খোলার সমর্থনে সরকারি তহবিল থেকে অর্থ দেওয়া, সরকারি অনুদান দেওয়া, অবৈতনিক শিক্ষা দান করা, নানা স্কলারশিপের ব্যবস্থা করা, প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শিক্ষিকা তৈরি করা ইত্যাদি। কমিশনের সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সরকার যথেষ্ট পরিমাণের অর্থ ব্যয় করতে পারেনি নারী শিক্ষার পেছনে। ফলে নারী শিক্ষা সেই বেসরকারি উদ্যোগ নির্ভরশীল হয়েই ছিল।

১৯০১-০২ এর মধ্যে মহিলাদের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১২টি মহিলা মহাবিদ্যালয়, ৪২২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৫৩০৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৪৫টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। তবে এর মধ্যে বেশিরভাগই ছিল বেসরকারি উদ্যোগ। যেমন ওপরে উদ্ধৃত সংখ্যাগুলির ভিতর সরকারি উদ্যোগ ছিল মোটে ১টি মহিলা মহাবিদ্যালয়, ৬৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৩২৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১৩টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ক্ষেত্রে।

এই সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান হল মহিলাদের জন্য ডাক্তারি পড়বার সুযোগ খুলে যাওয়া। ৭৬ জন মহিলা ছিলেন মেডিক্যাল কলেজে এবং ১৬৬জন ছিলেন মেডিক্যাল স্কুলে। মহিলাদের ডাক্তারি শিক্ষার জন্য একটি তহবিল গঠিত হয় যেটির নাম ছিল “লেডি ডাফরিন্ ফান্ড”।

১৯০২ এ ইন্ডিয়ান ইউনিভার্সিটি কমিশনের সময় থেকে ১৯২১ এ যখন শিক্ষাকে ভারতীয়দের হাতে হস্তান্তর করণের উদ্যোগ নেওয়া হল তখন পর্যন্ত নারী শিক্ষার বেশ দ্রুত অগ্রগতি দেখা যায়। এর মূল কারণ ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং সামাজিক সচেতনতা যার একটি রূপ নবজাগরণের আবির্ভাব। তা ছাড়াও ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে ভারতীয় জাতীয়তাবাদ ক্রমশ দানা বাঁধা ছিল। জাতীয় চেতনায় শিক্ষিত মেয়েদের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছিল।

লর্ড কার্জন (১৯০৪ খ্রিঃ) স্ত্রী শিক্ষার জন্য আরও বেশি সরকারি সাহায্য দেবার ব্যবস্থা করেন। তিনি মেয়েদের জন্য অনেকগুলি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন, অধিক সংখ্যক স্কুল পরিদর্শিকা নিয়োগ করেন এবং শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণের ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব দেন। ১৯২১-২২ সালের ভিতর মেয়েদের জন্য ১৯টি মহাবিদ্যালয়, ৬৭৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ২১,৯৫৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। যদিও সরকারি উদ্যোগের অনেক বৃদ্ধি দেখা গিয়েছিল কিন্তু তা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেসরকারি প্রচেষ্টার দরুন স্থাপিত হয়েছিল।

১৯০৫-১৯২০ জাতীয় শিক্ষা আন্দোলনের নেতৃবৃন্দরা স্ত্রী শিক্ষা প্রসারের ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন। যার ফলে মেয়েদের মধ্যে শিক্ষিতের হার বৃদ্ধি পায়। ১৯০৪ সালে শ্রীমতি অ্যানি বেসান্তের চেষ্টায় বারাণসীতে “সেন্ট্রাল হিন্দু গালর্স কলেজ” প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯১৩ খ্রিঃ ব্যাঙ্গালোরে শ্রীমতী পার্বতী আম্মা চন্দ্রশেখর “মহিলা সেবা সমাজ” প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২০ সালে এই সমাজ একটি নারী শিক্ষা কেন্দ্র খোলে। এই সময়কার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবণতা হল মেয়েদের বিবাহের বয়স বৃদ্ধি। এর ফলে মেয়েদের শিক্ষা লাভের সুযোগের বৃদ্ধি ঘটে। বিদ্যালয় এবং মহাবিদ্যালয়ে পাঠ গ্রহণের সুযোগ এবং শিক্ষা চালিয়ে গিয়ে সেটি সমাপন করার সুযোগও বৃদ্ধি পায়। পুরুষদের ভিতরও একটা সামাজিক এবং মানসিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। শিক্ষিতা স্ত্রীর প্রতি আকর্ষণ বাড়ায় নারী শিক্ষারও প্রসার হতে দেখা যায়।

নারী শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘঠনা ঘটে ১৯১৬ সালে। মহর্ষি ডি. কে কার্ভে বম্বেতে এস. এন. ডি. টি. নারী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯১৬ খ্রিঃ মেয়েদের শিক্ষার জন্য “লেডি হার্ডিঞ্জ মেডিকেল কলেজ” প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯২১-২২ সময় নাগাদ দেখা যায় যে ১৯৭ জন মহিলা ডাক্তারি কলেজে এবং ৩৩৪ জন ডাক্তারি বিদ্যালয়ে পাঠগ্রহণ করেছেন। ৬৭ জন শিক্ষক শিক্ষণ প্রশিক্ষণ নিয়েছেন মহাবিদ্যালয়ে এবং ৩, ৯০৩ জন নিয়েছেন বিদ্যালয়ে। বহু সংখ্যক মহিলা বাণিজ্যিক বিদ্যা এবং প্রযুক্তি নিয়ে চর্চা করেছেন। ১৯১৭ সালে “উইমেন্‌স ইডিয়ান এ্যাসোসিয়েশন” প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৮২১-১৯৪৭ এর মধ্যে নারী শিক্ষার আরও বেশি অগ্রগতি দেখা গেল। সামাজিক সচেতনতা এবং উদারতা সামাজিক চিন্তার আরো পরিবর্তন আনতে শুরু করে। মেয়েদের বিবাহযোগ্যতার বয়স আরও বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার প্রতি আগ্রহ এবং শিক্ষা সমাপন করার প্রবণতার বৃদ্ধি দেখা গেল। ১৯৪৭-এর মধ্যে ৫৯টি কলা এবং বিজ্ঞান মহাবিদ্যালয়, ২,৩৭০টি মাধ্যমিক এবং ২১,৪৭৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল মেয়েদের জন্য। ৪,২৮৮টি শিক্ষাকেন্দ্র মেয়েদের বৃত্তিমূলক, প্রশিক্ষণমূলক এবং বিশেষ শিক্ষা দান করত।

Leave a reply