Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

Add question

ভারতীয় সমাজে পিতৃতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার প্রকৃতি আলোচনা কর।

ভারতীয় সমাজে পিতৃতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার প্রকৃতি আলোচনা কর।

পিতৃতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার প্রকৃতি

ভারতীয় অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। অধিকাংশ পরিবারের জীবিকা কৃষিকাজ কৃষি উৎপাদন ও পুনরুৎপাদনের উপর ভারতের অর্থনীতি নির্ভরশীল। ভারতীয় সমাজের গঠনের ক্ষেত্রে পরিবারতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য বুঝে নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ পরিবারতন্ত্রের চরিত্রই সমাজে বৈষম্যের মূল কারণ। পরিবারের মহিলারা এই সমস্ত কিছুর সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। কৃষি ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থায় পরিবার ও সমাজে শ্রম বিভাজন আবশ্যিক হয়ে ওঠে। অতীতে সমাজ ব্যবস্থায় মহিলাদের কেবলমাত্র সন্তান প্রজননের ভূমিকায় দেখা যেত না। তারা কৃষির কাজে স্বামীদেরও যথেষ্ট সাহায্য করতেন। কিন্তু পরবর্তীকালে তাঁদের ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে রাখার ফলে তাঁদের স্বাধীনভাবে কোনও প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনাকাটার অধিকার ছিল না। এমনকি, পরিবারের ভূ-সম্পত্তির উপরও তাদের কোনও অধিকার ছিল না। এর ফলে শুধুমাত্র বেঁচে থাকার জন্য এঁদের পরিবারের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হত। মহিলারা পরিবারে প্রথমে “পিতা, পরে স্বামীর ও তারপর পুত্রের ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত হয়ে পড়েছিলেন। স্বাভাবিকভাবে ভারতীয় সমাজে নারীর অধিকার পরিবারের প্রধান পুরুষ সদস্যের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।

প্রত্যক্ষভাবে নারীদের পুরুষদের পাশাপাশি কৃষিজমিতে কাজ করতে না হলেও কৃষিজমিতে কর্মরত স্বামীদের বিভিন্ন ধরনের কাজে তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হয়। আবার তাঁদের সাংসারিক জীবন যাপনে সম্পূর্ণরূপে তাঁদের স্বামীর ইচ্ছায় চলতে হয়। এমনকি, সন্তান ধারণের ক্ষেত্রেও তাঁদের কোনও মতামত গ্রাহ্য করা হয় না। ফলে অনিয়ন্ত্রিত হারে দিনের পর দিন বংশ বিস্তার লাভ করে। অতিরিক্ত সন্তান ধারণের ফলে মহিলারা শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন, অসুস্থ হয়ে পড়েন। সমাজে নারীদের অবস্থা নির্ধারণে যখন তাঁদের কোনও রূপ অর্থনৈতিক স্বাধীনতা থাকে না, তখন তাঁদের স্বাভাবিক জীবন যাপন কষ্টকর হয়ে ওঠে। বহু অধিকার থেকে তাঁরা বঞ্চিত হন।

বর্তমানে প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে কৃষি ভিত্তিক অর্থনীতির সঙ্গে শিল্পায়ন যুক্ত হয়ে পড়ায় কৃষির প্রচুর উন্নতি হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় সামাজিক দিক থেকে মহিলাদের অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। সামান্য কিছু মহিলার সামাজিক, আর্থিক ও সাংস্কৃতিক মর্যাদা বৃদ্ধি পেলেও ভারতের অধিকাংশ মহিলারা দারিদ্র্য পীড়িত, নিরক্ষর ও পূর্বের ন্যায় ক্ষমতাহীন হয়ে পর্দার আড়ালে থেকে গেছেন। ভারতীয় মহিলাদের এই ধরনের অবস্থার মূলে সমাজে বিদ্যমান লিঙ্গ বৈষম্য ছাড়া আর কীই বা ভাবা যেতে পারে।

তাছাড়া, একজন ভারতীয় মহিলাকে সমাজে নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতিত হতে হয়। ভারতীয় সমাজে এমন অনেক ঘটনা ঘটে চলে যার ফলে নারীদের ধর্ষিত হতে হয়, নিহত হতে হয়, বিবাহে পণ না দিতে পারলে আগুনে পুড়ে মরতে হয়, স্বামী বা সংসারের অন্যান্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রহারও তাঁদের সহ্য করতে হয়। এইভাবে নারীদের সঙ্গে পরিবারের পুরুষ সদস্যের বৈষম্যমূলক আচরণের মাত্রা দিনের দিন বেড়েই চলে। কেন ভারতীয় নারীদের প্রতি এই ধরনের বৈষম্য হয় তার কারণ অনুসন্ধান করে দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে ভারতীয় নারীরা এত অবহেলিত কেন।

Leave a reply