সাধারণতঃ মানুষের চারপাশের অবস্থাকে পরিবেশ বলা হয়। আমাদের আশেপাশের আলো, বাতাস, জল, মাটি, গাছপালা, পশুপাশি, জীবজন্তু, ঘরবাড়ী, কল-কারখানা, স্কুল, কলেজ, অফিস, আদালত, নদনদী প্রভৃতি সব নিয়েই পরিবেশ।
পরিবেশের উপাদান
পরিবেশের উপাদানগুলি প্রায় সবগুলি জীব দেহের উপর প্রভাব বিস্তার করে তাই এদের প্রভাবক বলে। এই প্রভাবকগুলি আবার কয়েকটি ভাগে বিভক্ত। যতা- (i) আবহাওয়া জনিত প্রভাবক (ii)মৃত্তিকাজনিত প্রভাবক (iii) জৈব প্রভাবক (iv) ভূ-সংক্রান্ত প্রভাবক।
আবহাওয়াজনিত প্রভাবক
(ক) আলোক
সূর্য হলো পৃথিবীতে শক্তির একমাত্র উৎস। সূর্য থেকে পাওয়া আলোকরশ্মিকে উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষের মাধ্যমে রাসায়নিক শক্তি হিসাবে খাদ্যে সঞ্চিত রাখে। এটিই উদ্ভিদ ও প্রাণীদের জীবনের শক্তির অন্যতম প্রধান উৎস।
(খ) তাপমাত্রা
উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে ও প্রাণীদের শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপ নিয়ন্ত্রণে তাপের প্রভাব অপরিসীম। যেমন— ছায়ামুক্ত অঞ্চলে উদ্ভিদের মূল ও কাণ্ড দুর্বল প্রকৃতির হয়।
(গ) জল
জল জীবকুলের এক অপহিার্য যৌগ। জলের প্রাচুর্যতার উপর জীবদেহ ঘনত্ব বাড়ে ও কমে। বৃষ্টিপাতের তারতম্যের জন্য নিরক্ষীয় বনভূমি, উপমণ্ডলীয় বনভূমি, মরু অঞ্চলের বনভূমি, নাতিশীতোয় বনভূমি সৃষ্টি হয়েছে।
(ঘ) বাতাসের জলীয় বাষ্প
বাতাসে ভাসমান জলীয় বাষ্প পরিবেশের এক অপরিহার্য উপাদান। জলীয় বাষ্পের প্রভাবে গাছের বাষ্পমোচন হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে ও বায়বীয় উদ্ভিধরা বায়ু থেকে জল সংগ্রহ করে।
(ঙ) বায়ু
জীবের উপর পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে বাহুর লক্ষ্য করা যায়। জীবকুলের প্রাণ বায়ু O2 ,। আমরা CO2 , ত্যাগ করি গাছ আবার CO2 , এইণ করে সালোকসাে পদ্ধতিতে শর্করা জাতীয় খাদ্য তৈরী করে। আবার এখন বায়ু প্রবাহ উদ্ভিদ ও জীব কুলের ক্ষতি সাধনও করে। আবার মৌসুমী বায়ুর প্রবাহে আমাদের ভারতে র বৃষ্টিপাত ঘটে।
মৃত্তিকাজনিত প্রভাবক
প্রাণী ও উদ্ভিদের বসবাসের যোগ্য পৃথিবীর আদি শিলাস্তরের উপরিভাগ যে কোমল স্তর থাকে তাকে মুক্তিকা বলে। গঠন অনুযায়ী এটেল, বেলে, দোঁয়াশ ইত্যাদি ভাগে মাটিকে ভাগ করা যায়। আবার আয়তন অনুযায়ী মাটিকে বড় কাঁকুড়ে মাটি, ছোট কাঁকুড়ে মাটি, মোট কাঁকুড়ে মাটি, মোটা বেলে মাটি ইত্যাদিতে ভাগ করা যায়। মাটির গঠন, খনিজ লবণ, হিউমাস প্রভৃতি উদ্ভিদ ও প্রাণী জগতকে প্রভাবিত করে। এদের মৃত্তিকাজনিত শর্ত বা প্রভাবক বলে।
জৈব প্রভাবক
ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ভাইরাস, ব্যাকটিরিয়া থেকে শুরু করে মানুষ ‘পর্যন্ত সকল প্রাণীই এবং ছত্রাক, নীলাভ সবুজ শৈবাল থেকে শুরু করে সম উদ্ভিদ পরিবেশের জীবজাত উপাদন।
ভূ-সংক্রান্ত প্রভাবক
(ক) উচ্চতা
কোন স্থানের উচ্চতার উপর বায়ুমণ্ডলীয় চাপের তারতম্য হয়। এই চাপের তারতম্যের জন্য আর্দ্রতার তারতম্য দেখা দেয় যা উদ্ভিদের শারীরবৃত্তীয় কাজে প্রভাব বিস্তার করে।
(খ) পর্বতশ্রেণীর অবস্থান ও বিস্তার
পর্বতশ্রেণীর অবস্থান, বিস্তারের দিক এবং দূরত্ব কোন অঞ্চলের পরিবেশ ও বনানী গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। বায়ুর গতিপথ ও তীব্রতা, বৃষ্টিপাতের সময় ও হার অনেকাংশে গর্বতশ্রেণীর উপর নির্ভরশীল।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .