নেপালের ভূপ্রকৃতি
সাধারণভাবে নেপালের ভূপ্রকৃতি হল পর্বতময়। ভূপ্রকৃতির বিভিন্নতা অনুসারে নেপালকে দক্ষিণ থেকে উত্তরে প্রস্থ বরাবর মোটামুটি চার ভাগে ভাগ করা যায়, যথা :
- তরাই সমভূমি ও শিবালিক পর্বতশ্রেণি,
- মহাভারত লিখ,
- মধ্য উপত্যকা ও
- হিমাদ্রি হিমালয়।
(ক) তরাই সমভূমি ও শিবালিক পর্বতশ্রেণি
সর্ব দক্ষিণের সমতল অংশ তরাই সমভূমি নামে খ্যাত। হিমালয় নিঃসৃত নদনদীর পলি সিঞ্চনে হিমালয়ের পাদদেশের নিম্নাংশে এই সমভূমির সৃষ্টি হয়েছে। এর গড় উচ্চতা ২০০ মি.। শিবালিক পর্বতশ্রেণি এই সমভূমির উত্তরাংশে বিচ্ছিন্নভাবে দণ্ডায়মান রয়েছে। এর গড় উচ্চতা প্রায় ১,৫০০ – ২,০০০ মিটার। শিবালিক ও মহাভারত লিখ পর্বতশ্রেণির মধ্যে কতকগুলি দুন উপত্যকা বর্তমান। যথা : রাপ্তি, ডাং ও চিটাওয়ান।
(খ) মহাভারত লিখ
শিবালিকের উত্তরে প্রায় ৩,০০০ মি. উচ্চ মহাভারত লিখ (পর্বতশ্রেণি) অবস্থিত। এর ঢাল বেশ খাড়া। মাঝেমধ্যে গিরিপথ বর্তমান। যেমন : তানসিং, ধানকুটা প্রভৃতি।
(গ) মধ্য উপত্যকা
মহাভারত লিখ ও হিমাদ্রির মধ্যবর্তী প্রায় ৬০-১০০ কিমি প্রস্থবিশিষ্ট অঞ্চলে পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রায় ৯০০ কিমি দীর্ঘ মধ্য উপত্যকা অবস্থিত। এর গড় উচ্চতা ৬০০-২,০০০ মিটার এবং ঢাল খুবই কম। ভূ-বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে মহাভারত লিখ ক্রমশ। উঁচুতে ওঠায়, অতীতে কিছু নদীর নির্গমন পথ বন্ধ হয়ে যে সমস্ত হ্রদের সৃষ্টি হয়েছিল, তাতে পলি সঞ্চিত হয়ে এই বিশাল উপত্যকা অঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে। কাঠমাণ্ডু, পোখরা প্রভৃতি শহর এই হ্রদ সমভূমির নিদর্শন।
(ঘ) হিমাদ্রি হিমালয়
মধ্য উপত্যকার উত্তরে নেপালের সীমানা পর্যন্ত হিমাদ্রি বিস্তৃত। এই অত্যন্ত দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলটিতে পৃথিবীর উচ্চতম শৃঙ্গগুলি অবস্থিত। এদের মধ্যে পৃথিবীর উচ্চতম শৃঙ্গ এভারেস্ট (৮,৮৪৯ মি.), ধবলগিরি (৮,১৭২ মি.), গৌরীশঙ্কর (৭,১৪৫ মি.), মনাসলু (৮,১৫৮ মি.), অন্নপূর্ণা (৮,০৭৮ মি.), মাকালু (৮,৪৮১ মি.) প্রভৃতি শৃঙ্গগুলি বিখ্যাত। হিমাদ্রী উত্তরে ঢালু হয়ে তিব্বতের মালভূমিতে মিশেছে।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .