নিয়ত বায়ু
সারা বছর ধরে নিয়মিতভাবে যে-বায়ু একটি নির্দিষ্ট দিক থেকে আর একটি নির্দিষ্ট দিকে প্রবাহিত হয় তাকে নিয়ত বায়ুপ্রবাহ বলে।
(ক) আয়ন বায়ু, (খ) পশ্চিমা বায়ু এবং (গ) মেরুদেশীয় বায়ু হল নিয়ত বায়ু প্রবাহের উদাহরণ।
■ [ক] আয়ন বায়ু
কর্কটীয় এবং মকরীয় উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে সারা বছর ধরে নিয়মিতভাবে এবং নির্দিষ্ট পথে প্রবাহিত বায়ুকে আয়নবায়ু বলে। উত্তর গোলার্ধে এই বায়ুপ্রবাহের নাম উত্তর-পূর্ব আয়নবায়ু এবং দক্ষিণ গোলার্ধে এই বায়ুপ্রবাহের নাম দক্ষিণ-পূর্ব আয়নবায়ু ৷ আগেকার দিনে এই বায়ুপ্রবাহের সাহায্যে পালতোলা জাহাজ চালাতে সুবিধা হত বলে এই বায়ুকে “বাণিজ্য বায়ু” ও বলা হয়।
■ [খ] পশ্চিমা বায়ু
কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে মেরুদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে সারা বছর ধরে নিয়মিতভাবে প্রবাহিত বায়ুকে পশ্চিমাবায়ু বলে। পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয় বলে এই বায়ুপ্রবাহকে পশ্চিমাবায়ু বলা হয়। উত্তর গোলার্ধে এই বায়ুপ্রবাহের নাম দক্ষিণ-পশ্চিম
পশ্চিমাবায়ু এবং দক্ষিণ গোলার্ধে এই বায়ুপ্রবাহের নাম উত্তর-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু।
গর্জনশীল চল্লিশা
উত্তর গোলার্ধে জলভাগের চেয়ে স্থলভাগ বেশি থাকায় স্থলভাগের পাহাড়-পর্বতে পশ্চিমাবায়ু বায়ুপ্রবাহ বাধা পায়। এরফলে বায়ুর দিক ও গতি খুবই পরিবর্তিত হয়। কিন্তু দক্ষিণ গোলার্ধে জলভাগ বেশি থাকায় পশ্চিমা বায়ুর গতিপথে কোনো রকম বাধার সৃষ্টি হয় না। তাই ৪০° থেকে ৫০° দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যে এই বায়ু প্রবল বেগে প্রবাহিত হয়। এই বায়ু প্রবল গর্জন করতে করতে প্রবাহিত হয় বলে, ৪০° দক্ষিণ অক্ষাংশকে গর্জনশীল চল্লিশা বলে।
■ [গ] মেরুদেশীয় বায়ু
মেরুবায়ু সাধারণত উভয় গোলার্ধে মোটামুটিভাবে ৭০°-৮০° অক্ষরেখার মধ্যে মেরুদেশীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে মেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে সারা বছর ধরে প্রবাহিত হয়। উত্তর গোলার্ধে এই বায়ু উত্তর-পূর্ব মেরুবায়ু এবং দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণ-পূর্ব মেরুবায়ু নামে পরিচিত। এই দুই বায়ু প্রবাহ খুবই শীতল এবং শুকনো।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .