তৃণভূমির বাস্তুতন্ত্র
পৃথিবীর স্থলভূমির প্রায় শতকরা ১৯ ভাগ অঞ্চল জুড়ে রয়েছে তৃণভূমি। উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধের ৪০°-৫০° অক্ষাংশ পর্যন্ত তৃণভূমি বিস্তৃত। এই অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২৫–২৭ সেন্টিমিটার। এখানে দিনে ও রাতে তাপমাত্রা কমবেশী ওঠা নামা করে। গ্রীষ্মকালে এখানকার তাপমাত্রা ৩২°C-এর উপরে উঠে আসে এবং শীতকালে তাপমাত্রা ১৫°C-এ নেমে আসে। এশিয়ার স্তেপ, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেইরি, অস্ট্রেলিয়ার ডাউনস্ ইত্যাদি বিভিন্ন তৃণভূমি অঞ্চল রয়েছে। তৃণভূমির বাস্তুতন্ত্রের উপাদানগুলি নিম্নরূপ :
(ক) অজৈব উপাদান
অজৈব উপাদানের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হল মৃত্তিকা এবং বাতাসে উপস্থিত বিভিন্ন প্রকার পুষ্টি পদার্থসমূহ। কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, ফসফরাস, সালফার ইত্যাদি মৌলগুলি সাধারণত কার্বন-ডাই-অক্সাইড, জল, নাইট্রেট, সালফেট, ফসফেট প্রভৃতি থেকে উদ্ভূত হয় এবং এই প্রকার যৌগগুলি তৃণভুমির বাস্তুতন্ত্রের বাতাস ও মৃত্তিকায় উপস্থিত থাকে।
(খ) জৈব উপাদান
(১) উৎপাদক
বিভিন্ন ধরনের ঘাস জাতীয় উদ্ভিদ, যেমন– Desmodium, Cynodon, setaria, Sporobolus ইত্যাদি ছাড়াও কিছু আগাছা ও গুল্পজাতীয় উদ্ভিদ, উৎপাদক হিসাবে কাজ করে।
(২) খাদক :
(i) প্রথম শ্রেণীর খাদক
বিভিন্ন তৃণভোজী প্রাণী যারা প্রধানত তৃণজাতীয় উদ্ভিদের খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে তারা এই শ্রেণীর অন্তর্গত। যেমন— গরু, মহিষ, হরিণ, ভেড়া ইত্যাদি। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের পতঙ্ক যেমন ফড়িং, কিছু উইপোকা, কেন্নো জাতীয় প্রাণী এই শ্রেণির খাদকের পর্যায়ে পড়ে।
(ii) দ্বিতীয় শ্রেণীর খাদক
বিভিন্ন ধরনের মাংসাশী প্রাণী যারা প্রথম শ্রেণীর খাদক অর্থাৎ তৃণভোজী প্রাণীদের খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে তারা এই শ্রেণীর অন্তর্গত। যেমন—সাপ, গিরগিটি, ব্যাঙ, শিয়াল, পাখি ইত্যাদি।
(iii) তৃতীয় শ্রেণীর খাদক
কিছু বিশেষ প্রাণী যারা দ্বিতীয় শ্রেণী খাদকদের খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে তারা তৃতীয় শ্রেণীর খাদক হিসাবে চিহ্নিত হয়। যেমন— বাজপাখি, ঈগল, পেঁচা, ময়ুর ইত্যাদি।
(iv) বিয়োজক
বিভিন্ন প্রকার খাদক যেমন— মিউচর পেনিসিলিয়াম ইত্যাদি এবং ব্যাকটেরিয়া ও অ্যান্টি নোমাই সেটিন যারা মৃত গলিত দেহবশাষের উপরজন্মায়। বিয়োজকের ভূমিকা গ্রহণ করে।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .