বান
ভরা কটালের সময় জোয়ারের জল নদীর মোহনা দিয়ে নদীপথে প্রবেশ করলে নদী প্রবাহের বিপরীত দিকে জলরাশি অগ্রসর হয়। ঢেউ ও জলোচ্ছ্বাসসহ নদীর এই বিপরীত প্রবাহকে বান বলে। সমুদ্রের মধ্যভাগে সাধারণত জোয়ারের সময় সমুদ্রতল ১ মিটারের মতো উঁচু হয়। তবে বর্ষাকালে এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
বান সৃষ্টির কারণ
(১) নদীর মোহনার কাছে বালির চড়া থাকলে, (২) নদীতে প্রবাহিত জলের পরিমাণ বেশি হলে এবং (৩) নদীর মোহনা ফানেল ও শঙ্কু আকৃতির হলে নদীতে বান খুব প্রবল হয়। টেম্স, হুগলি, আমাজন, ইয়াং-সি-কিয়াং প্রভৃতি নদীতে বান ডাকে। পশ্চিমবঙ্গের হুগলি, চিনের ইয়াং-সি-কিয়াং, ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের টেমস প্রভৃতি নদী-মোহনায় বর্ষাকালে ভরা কটালের মাত্রা অনেক সময় ৬-৯ মিটারের মত উঁচু হয়। এই উঁচু জল যখন নদীপথে প্রবল বেগে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে, তখন একে বান ডাকা বলে। এই সময় নদীতে স্নান অথবা নৌ-চালনা করা অত্যন্ত বিপজ্জনক।
ষাড়াষাড়ি বান
বর্ষাকালে হুগলি নদীতে ভরা জোয়ারের সময় নদীর গতিপথের বিপরীত দিকে ভীষণ গর্জন করে যে প্রবল বান আসে তাকে ষাঁড়াষাঁড়ি বান বলে। বর্ষার সময় সাধারণত জুলাই-আগষ্ট মাসে হুগলি নদীতে এমনিতেই নদীতে জলপ্রবাহ খুব বেশি থাকে। এই সময় হুগলি নদীতে যে প্রবল বান আসে তার জন্য হুগলি নদীর জল প্রায় ৭/৮ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়ে ওঠে এবং দুটি প্রাপ্ত বয়স্ক ষাঁড়ের মধ্যে লড়াইয়ের সময় যে প্রবল গর্জন শোনা যায়, এই বান আসার সময় অনেকটা ঐ রকম আওয়াজ পাও যায় বলেই একে ষাঁড়াষাঁড়ি বান বলে। ষাঁড়াষাড়ি বান হল বিশেষ একটি নদীর বিশেষ সময়ের বান।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .