জীব সৃষ্টির বিভিন্ন ধাপ
পৃথিবীর আদি অবস্থায় প্রচুর হাইড্রোজেন গ্যাস নাইট্রোজেনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে অ্যামােনিয়া (NH3) তৈরি করে। অন্যদিকে অক্সিজেনের সঙ্গে হাইড্রোজেনের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন হয় জল (H2O)। আর কার্বনের সঙ্গে হাইড্রোজেন বিক্রিয়া করে তৈরি করে মিথেন (CH4)। এ ছাড়া, অ্যাসিটিলিন (C2H2), ইথিলিন (C2H4) প্রভৃতি হাইড্রোকার্বন।
উষ্ণ জলীয় বাষ্পের সঙ্গে হাইড্রোকার্বনের বিক্রিয়ায় তৈরি হয় অ্যালডিহাইড, অ্যাসিড ও কিটোন [Ketones]।
কার্বন, হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন— এই তিনটি উপাদান নিয়ে শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট গঠিত হয়। কিটোন এবং অ্যালডিহাইডের রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে সৃষ্টি হয় ফ্যাটি অ্যাসিড। সামুদ্রিক পরিবেশে ফ্যাটি অ্যাসিডের সঙ্গে গ্লিসারলের (প্রায় শর্করার মতাে পদার্থ) সংমিশ্রণে তৈরি হয় ফ্যাট বা স্নেহপদার্থ।
বিভিন্ন হাইড্রোকার্বন, অ্যামােনিয়া এবং জলের রাসায়নিক বিক্রিয়ায় প্রাকৃতিক পরিবেশে অ্যামিনাে অ্যাসিডের (Amino Acid) সৃষ্টি হয়। এই অ্যামিনাে অ্যাসিড থেকে সৃষ্টি হয় প্রােটিন অণু। এখানে উল্লেখ্য যে, কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন এবং নাইট্রোজেন হল প্রােটিনের মূল উপাদান।
সামুদ্রিক পরিবেশে এই জৈব অণুগুলির সাহায্যে আদি কোশের সৃষ্টি হয় এবং ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক পরিবেশে এই আদি কোশগুলি থেকে উদ্ভিদ ও প্রাণীর উদ্ভব ঘটে।
ওপরের ঘটনাগুলিকে দুটি মূল পর্যায়ে ভাগ করা যায়। যেমন- (১) রাসায়নিক বিবর্তন (Chemical evolution) ও (২) জৈব বিবর্তন (Organic evolution)।
রাসায়নিক বিবর্তন পর্যায়ে রয়েছে চারটি ধাপ, যেমন—
১ম ধাপ-এ – অ্যামােনিয়া, মিথেন ও জলের সৃষ্টি;
২য় ধাপ-এ – অ্যামিনাে অ্যাসিড, পলিস্যাকারাইড, ফ্যাটি অ্যাসিড প্রভৃতির সৃষ্টি;
৩য় ধাপ-এ – প্রােটিন, ফ্যাট, নিউক্লিওটাইড় ইত্যাদির সৃষ্টি;
৪র্থ ধাপ-এ – নিউক্লিও-প্রােটিন সৃষ্টি, প্রােটোভাইরাস-এর সূচনা।
এরপরে জৈব বিবর্তন শুরু হয়েছে। এই জৈব বিবর্তন পর্যায়ে রয়েছে তিনটি ধাপ, অর্থাৎ
৫ম ধাপ-এ – সৃষ্টি হয়েছে ভাইরাস;
৬ষ্ঠ ধাপ-এ – সৃষ্টি হয়েছে ব্যাকটিরিয়া;
৭ম ধাপ-এ – সৃষ্টি হয়েছে প্রােটোজোয়া এবং বহুকোশীজীব।
Read More
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .