জার্মপ্লাজম সংরক্ষণ
যে পদ্ধতিতে কোনো অর্থনৈতিক বা শারীরবৃত্তীয় গুণের অধিকারী জীবের প্রোটোপ্লাজমযুক্ত উন্নত কোশকে কোনো নিম্নশ্রেণির জীবের উন্নতি ঘটানোর জন্য সংরক্ষিত করা হয়, তাকে জার্মপ্লাজম সংরক্ষণ বলে। ইংরেজি পরিভাষায় একে কনজারভেশন অব জার্মপ্লাজম (Conservation of Germplasm) বলা হয়।
জার্মপ্লাজম রক্ষণ করা দরকার কেন
(১) জনসংখ্যা যেভাবে দ্রুত বেড়ে চলেছে, তাতে প্রতিদিনই আরও বেশি করে খাদ্য উৎপাদন করা দরকার। এই অবস্থায় কৃষকের দরকার হল অধিক উৎপাদনশীল বা উচ্চফলনশীল বীজ। আর তার জন্য চাই উচ্চফলন গুণসম্পন্ন শস্য প্রজাতির কোেশ। জার্মপ্লাজম সংরক্ষণ ছাড়া এ-কাজ কিছুতেই সম্ভব নয়।
(২) খাদ্য হিসাবে মানুষের দরকার দুধ, মাছ, ডিম, মাংস ইত্যাদি। তাই দুধের উৎপাদন বাড়াতে হলে যেমন— সংকর জাতের গোরু চাই, তেমনি মাছ, ডিমের ফলন বাড়ানোর জন্য দরকার উন্নত প্রজাতির মাছ, মুরগি, হাঁস ইত্যাদি। জার্মপ্লাজম সংরক্ষণ করে এই কাজ করা যায়।
(৩) জীববৈচিত্র্যকে রক্ষা করতে পারলে বিবর্তনের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখা যায়। আজ পর্যন্ত পৃথিবী থেকে কত প্রাণী ও উদ্ভিদ চিরদিনের জন্য হারিয়ে গেছে এবং প্রতিনিয়ত কত প্রাণী ও উদ্ভিদ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। জার্মপ্লাজম সংরক্ষণ করে এদের ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব।
(৪) বিভিন্ন উদ্ভিদের মধ্যে রোগ, পোকা, ভাইরাস, ব্যাকটিরিয়া, ছত্রাকের আক্রমণ প্রতিহত করার ক্ষমতা আছে। জার্মপ্লাজমের সাহায্যে ওই উদ্ভিদগুলির জিনকে ধান, গম, ভুট্টা, সবজি, ফল, ফুলের গাছের জিনের সঙ্গে সংযোজন করতে পারলে, ধান, গম, সবজির মধ্যে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা জন্মাবে। গাছপালা সহজেই ভাইরাস, ব্যাকটিরিয়া, ছত্রাকের আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবে। ফলে কৃষিক্ষেত্রে রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার কমবে। এর ফলে পরিবেশ দূষণও কমবে।
কীভাবে জার্মপ্লাজম সংরক্ষণ করা যায়?
দু-ভাবে জার্মপ্লাজম সংরক্ষণ করা যায়। এই দুটি পদ্ধতি হল – (১) এক্স সিটু (Ex-situ) কনজারভেশন এবং (২) ইন সিটু (In-situ) কনজারভেশন।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .