জমির মানের অবনমন
ভূমি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ। এটি হল ভূ-ত্বকের একটি অংশ যা উদ্ভিদকূলের একমাত্র ধারক ও বাহক এবং যা মৃত্তিকা দ্বারা আবৃত। কিন্তু সমগর বিশ্বে ভূমির অপব্যবহার, অতিব্যবহার এবং অব্যবস্থাপনার দরুণ এই মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদটি আজ সমস্যায় জর্জরিত। সুতরাং বলা যায় যে সমস্ত জমি ক্রমশ কৃষিকাজের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে তাকে অনুর্বর জমি বলে এবং এই অবস্থাকে বলা হয় জমির মানের অবনমন।
বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট কারণে ভূ-পৃষ্ঠের কোনো কোনো স্থানে জমির মানের অবনমন ঘটেছে। এর পিছনে যে কাজগুলি বর্তমান সেগুলি হল—
- নির্বিচারে অরণ্য ধ্বংস করা।
- যথেষ্ট পরিমাণ চারাগাছ না লাগানো।
- মাটি পরীক্ষা না করে জমিতে রাসায়নিক সার প্রয়োগ।
- দীর্ঘদিন ধরে মাটির উপর দূষিত জল, আবর্জনা জমা হওয়া।
- জমিতে অতিরিক্ত সেচ প্রয়োগ।
- অতিরিক্ত পশুচারণের দরুণ ছোট উদ্ভিদ জন্মাতে না পারারফলে ভূমিক্ষয় বৃদ্ধি।
- দাবানলের প্রভাবে বনের গাছপালা পুড়ে যাওয়ার দরুণ জমির মান অবনমন।
- খনি তৈরীর জন্য দীর্ঘদিন ধরে মাটি, পাথর কেটে জমির উপর স্তুপ করে রাখায় জমির মান অবনমন।
- পাহাড়ী অঞ্চলে ধ্বস নামার ফলে এবং আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে জমির মানের অবনমন।
ভূমিক্ষয় অর্থাৎ মানুষ কৃষিকাজ শুরু কর মানের অবনমন জমির মানের অবনমন কোনো নতুন ঘটনা নয়। আদিম যুগে যখন করল এবং সেই তাগিদে বসতি স্থাপন করল তখন থেকেই ভূমিক্ষয় শুরু হয়। প্রাচ্যের দেশগুলোতে ভূমিক্ষয়ের মূল কারণই ছিল অতিরিক্ত মাত্রায় কৃষিকাজ। এছাড়া ভূমিক্ষয়ের মাত্রা নির্ভর করে মাটির বৈশিষ্ট্য অর্থাৎ কণার আকৃতি, জলধারণ ক্ষমতা, কণাগুলির পারস্পরিক সংঘবদ্ধথা ইত্যাদির উপর। তাছাড়া ভূমিরা পয়ঃপ্রণালী যদি যথাযথ না হয় তাহলে জল আবদ্ধ হয়ে পড়ে এবং জলের লবণাক্ততা বৃদ্ধি পায়। এর ফলেও জমির মানের অবনমন ঘটে।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .