গঙ্গা নদীর উৎস ও গতিপথ
2.510 কিলােমিটার দীর্ঘ পুণ্যতােয়া গঙ্গা ভারতের দীর্ঘতম নদী। যার মধ্যে 2.107 কিলােমিটার ভারতে প্রবাহিত হয়েছে। গঙ্গার তিনটি গতিপ্রবাহ দেখা যায়। তিনটি গতিপ্রবাহের জন্য গঙ্গাকে বলা হয় “আদর্শ নদী”।
গঙ্গার পার্বত্যপ্রবাহ বা গঙ্গার উচ্চগতি
গঙ্গা কুমায়ুন হিমালয়ের গঙ্গোত্রী গােমুখ নামে তুষার গুহা থেকে ভাগীরথী নামে উৎপন্ন হয়ে সংকীর্ণ গিরিখাতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দেবপ্রয়াগে অলকানন্দার (পিন্ডার, ধৌলিগঙ্গা, ঋষিগঙ্গা, বিষেণগঙ্গা, মন্দাকিনীর মিলিত প্রবাহ) সঙ্গে মিলিত হয়েছে। দেবপ্রয়াগের পর থেকে ভাগীরথী ও অলকানন্দার দুই মিলিত প্রবাহ গঙ্গা নামে পরিচিত হয়েছে। এরপর শিবালিক পর্বত অতিক্রম করে গঙ্গা হরিদ্বার এর কাছে সমভূমিতে নেমে এসেছে। উৎসস্থল থেকে হরিদ্বার পর্যন্ত গতিপথ গঙ্গার পার্বত্য প্রবাহ বা গঙ্গার উচ্চগতি বলে।
গঙ্গার মধ্যগতি বা সমভূমি প্রবাহ
হরিদ্বার শহর ততিক্রম করে গঙ্গা প্রথমে দক্ষিণমুখী এবং পরবর্তীকালে পূর্বমুখী হয়ে উত্তরপ্রদেশ, বিহার রাজ্যের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে রাজমহল পাহাড়ের পূর্বদিক দিয়ে দক্ষিণমুখী হয়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করেছে এবং কিছুদূর প্রবাহিত হওয়ার পর মুরশিদাবাদ জেলার গিরিয়ার কাছে (a) ভাগীরথী ও (b) পদ্মা নামে দুটি শাখা নদীতে বিভক্ত হয়েছে।
(a) গঙ্গার প্রধান শাখাটি পূর্মুখী হয়ে প্রথমে পদ্ম এবং পরে মেঘনা নামে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে শেষ পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। হরিদ্বার থেকে রাজমহল পাহাড় পর্যন্ত গঙ্গার প্রবাহ পথকে গঙ্গার মধ্যগতি বা সমভূমি প্রবাহ বলে
(b) গঙ্গার ক্ষীণস্রোতা দ্বিতীয় শাখাটি ভাগীরথী-হুগলি নদী নামে দক্ষিণমুখী হয়ে পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে অবশেষে সাগরদ্বীপের কাছে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে।
গঙ্গার নিম্নগতি বা বদ্বীপ প্রবাহ
রাজমহল পাহাড় থেকে মােহনায় বঙ্গোপসাগরের উপকূল পর্যন্ত গঙ্গার গতিপথটি বলে গঙ্গার নিম্নগতি বা বদ্বীপ প্রবাহ।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .