কলকাতা বন্দরের গুরুত্ব
পশ্চিমবঙ্গের প্রধান দুটি বন্দর হল কলকাতা ( হুগলি নদীর বামতীরে অবস্থিত ) ও হলদিয়া। এই বন্দর দুটি নদীভিত্তিক বন্দর হিসেবে পরিচিত। কলকাতা বন্দর হল একটি নদীভিত্তিক বন্দর। বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী অঞ্চলে প্রায় 130 কিমি অভ্যন্তরে হুগলি নদীর বামতীরে কলকাতা বন্দরটি অবস্থিত । কলকাতা বন্দরের পশ্চাদভূমি প্রায় 13 লক্ষ বর্গকিমি অঞ্চল জুড়ে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কলকাতা বন্দরের গুরুত্ব অপরিসীম—
বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ
পশ্চিমবঙ্গ তথা পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারত এবং নেপাল ও ভুটানের অর্থনীতিতে কলকাতা বন্দরের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই বিশাল পশ্চাদভূমির পণ্যসমূহের আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যের অধিকাংশই কলকাতা বন্দরের মাধ্যমে হয়।
বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন
কলকাতা বন্দরের মাধ্যমেই বিদেশে বাণিজ্য সম্পন্ন হয় বলে আমদানি-রপ্তানি থেকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভবপর হয়েছে।
বাণিজ্যে সহায়তা
পশ্চিমবঙ্গের চা , পাটজাত দ্রব্য ও কয়লা , অসমের চা , ওডিশা ও বিহারের আকরিক লোহা , কয়লা , অভ্র প্রভৃতি কলকাতা বন্দরের মাধ্যমে বিদেশে রপ্তানি হয়।
কৃষিতে সহায়তা
এই বন্দরের মাধ্যমে বিশাল পশ্চাদভূমির শুধু উদ্বৃত্ত পণ্য রপ্তানিই নয় , এখানকার কৃষিকাজের জন্য প্রয়োজনীয় সার , কীটনাশক , যন্ত্রপাতি প্রভৃতি আমদানিও করা হয়। তাই বলা যায় , এই পশ্চাদভূমির কৃষি উন্নতিতে কলকাতা বন্দরের গুরুত্ব অপরিসীম।
কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি
এই অঞ্চলের কৃষিকাজ , শিল্পকর্ম , ব্যাবসা বাণিজ্য প্রভৃতির মাধ্যমে যে লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হয় তাও পরোক্ষভাবে কলকাতা বন্দরের মাধ্যমেই ঘটে। এ ছাড়া বন্দরে বহু শ্রমিকের কর্মসংস্থানও ঘটে।
পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতি
প্রধানত আমদানি-রপ্তানির সুবিধার জন্য কলকাতা বন্দরকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গ তথা সমগ্র পূর্ব ভারতে সড়ক , রেল ও জলপথ পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটেছে।
খাদ্যদ্রব্য আমদানি
পশ্চিমবঙ্গ খাদ্যশস্য উৎপাদনে সম্পূর্ণভাবে আত্মনির্ভর নয়। তাই খাদ্যদ্রব্য আমদানি করার জন্য কলকাতা বন্দরের ওপর নির্ভরশীল হতে হয়। তাই বলা যায় , পশ্চিমবঙ্গের প্রধান বন্দর হিসেবে কলকাতা বন্দরের গুরুত্ব অপরিসীম।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .