Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

Add question

আয়ন বায়ু সম্পর্কে যা জান লেখ।

আয়ন বায়ু

যেসব বায়ু সারাবছর ধরে একটি নির্দিষ্ট দিক থেকে আর একটি নির্দিষ্ট দিকে প্রবাহিত হয়, তাদের নিয়তবায়ু বলে। নিয়তবায়ুর উদাহরণ হল : (১) আয়নবায়ু, (২) পশ্চিমাবায়ু, এবং (৩) মেরুবায়ু।

“আয়ন” শব্দটির অর্থ “পথ”। তাই আয়ন বায়ু বলতে একই দিকে, একই পথে নিয়মিত ভাবে নির্দিষ্ট বেগে বায়ুর প্রবাহকে বোঝায়। কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে যে বায়ু সারা বছর ধরে প্রবাহিত হয় তাকে আয়নবায়ু বলে।

আয়নবায়ুর বৈশিষ্ট্যগুলো হল

(১) আয়নবায়ু উত্তর গোলার্ধে সরাসরি উত্তরদিক থেকে দক্ষিণে প্রবাহিত না হয়ে ফেরেলের সূত্র অনুসারে ডান দিকে বেঁকে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে উত্তর-পূর্ব আয়নবায়ু হিসেবে প্রবাহিত হতে থাকে।

(২) দক্ষিণ গোলার্ধে আয়নবায়ু সরাসরি দক্ষিণ থেকে উত্তরে প্রবাহিত না হয়ে ফেরেলের সূত্র অনুসারে বাঁ দিকে বেঁকে দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে দক্ষিণ-পূর্ব আয়নবায়ু হিসেবে প্রবাহিত হতে থাকে।

(৩) উত্তর গোলার্ধে স্থলভাগ বেশি থাকার জন্য পাহাড়-পর্বতে বাধা পেয়ে উত্তর গোলার্ধে উত্তর পূর্ব আয়নবায়ু একটু ধীর গতিতে ঘন্টায় প্রায় ১৬ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হতে থাকে।

(8) দক্ষিণ গোলার্ধে জলভাগের পরিমাণ বেশি থাকার জন্য দক্ষিণ-পূর্ব আয়নবায়ু বাধাহীন ভাবে, তুলনামূলক ভাবে দ্রুত গতিতে (ঘন্টায় প্রায় ২২-৩০ কিলোমিটার বেগে) প্রবাহিত হয়।

(৫) উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব, এই দু’রকমের আয়নবায়ুই ক্রান্তীয় অঞ্চলের কম উষ্ণ স্থান থেকে নিরক্ষীয় অঞ্চলের বেশি উষ্ণ স্থানের দিকে প্রবাহিত হয় বলে আয়নবায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাত সাধারণত হয় না। তাই আয়নবায়ুর গতি পথে পৃথিবীর বড়ো বড়ো মরুভূমিগুলো অবস্থিত (যেমন : সাহারা, থর প্রভৃতি)।

(৬) কিন্তু আয়নবায়ু যদি সমুদ্রের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আসে তবে সেখানে কিছু কিছু বৃষ্টিপাত ঘটায়, যেমন : উত্তর-পূর্ব ব্রাজিল, হাওয়াই এবং উত্তর-পূর্ব অস্ট্রেলিয়া।

(৭) আয়ন বায়ুর প্রভাবে মহাদেশগুলোর পূর্বাংশে বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ার জন্য কৃষিকাজের সুবিধা বেশি। পশ্চিম দিকে বৃষ্টিপাত ক্রমশ কমে যায়।

(৮) আয়নবায়ুর গতি যেমন নির্দিষ্ট, তেমনি তার গতিবেগও খুব নিয়মিত। আগেকার দিনে যখন পালতোলা জাহাজে করে বাণিজ্য হত তখন এই বায়ুপ্রবাহের সাহায্যে পালতোলা জাহাজ চালাতে সুবিধা হত বলে এই বায়ুকে বাণিজ্যবায়ুও বলা হয়।

(৯) নিরক্ষরেখার নিকটবর্তী অঞ্চলে (৫° উত্তর অক্ষাংশ থেকে ৫° দক্ষিণ অক্ষাংশ পর্যন্ত স্থানে) উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব আয়নবায়ু মিলিত হয় বলে ওই অঞ্চলে কোনো বায়ুপ্রবাহ থাকে না। একে নিরক্ষীয় শান্তবলয় বলে।

(১০) শীতকালে দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণ-পূর্ব আয়নবায়ু ২৩° দক্ষিণ অক্ষাংশ থেকে ৫০ দক্ষিণ অক্ষাংশের দিকে আসে। এই সময় উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল। এই সময় উত্তর গোলার্ধে উত্তর-পূর্ব আয়নবায়ু ৩০° উত্তর অক্ষাংশ থেকে ১০° উত্তর অক্ষাংশের দিকে আসে।

গ্রীষ্মকালে দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণ-পূর্ব আয়নবায়ু ৩০° দক্ষিণ অক্ষাংশ থেকে প্রায় ১০০ দক্ষিণ অক্ষাংশের দিকে আসে। এই সময়ে উত্তর গোলার্ধে শীতকাল। এই সময় উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু উত্তর গোলার্ধের ২৩° উত্তর অক্ষাংশ থেকে প্রায় ৫° উত্তর অক্ষাংশের দিকে আসে।

Leave a reply