আধুনিক খাজনা তত্ত্ব
রিকার্ডো তাঁর খাজনা তত্ত্বে খাজনার ধারণাকে সংকীর্ণ অর্থে ব্যবহার করেছেন। রিকার্ডোর তত্ত্ব অনুযায়ী জমিই শুধু খাজনা অর্জন করে। কিন্তু আধুনিক অর্থনীতিবিদদের মতে, উৎপাদনের যে কোনো উপকরণই খাজনা অর্জন করতে পারে। কোনো উপাদানের আয়ে একটি অর্থনৈতিক খাজনা থাকে।
আধুনিক খাজনা তত্ত্ব অনুযায়ী কোনো একটি উপাদান তার স্থানান্তর আয় অপেক্ষা যে অতিরিক্ত পরিমাণ আয় করে তাকেই ঐ উপাদানের অর্থনৈতিক খাজনা বলা হয়ে থাকে। আর কোনো উপাদানের স্থানান্তর আয় হলো সেই উপাদানকে উৎপাদনের কাজে রাখতে গেলে ন্যূনতম যে পরিমাণ পারিশ্রমিক দিতে হয় তা-ই। স্থানান্তর আয়ের চেয়ে অধিক উপার্জন কোনো উপাদান করলে সেই অতিরিক্ত আয়কে অর্থনৈতিক খাজনা বলে।
খাজনার আধুনিক তত্ত্ব অনুযায়ী উদ্বৃত্ত আয় বা অর্থনৈতিক খাজনা তখনই উদ্ভব হয় যখন কোনো জোগান সম্পূর্ণ স্থিতিস্থাপক না হয়ে ঐ উপাদানটি নির্দিষ্ট কোনো কাজে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশেষ উপযোগী হয়। কোনো উপকরণের জোগান সম্পূর্ণ স্থিতিস্থাপক হলে সেই উপাদানের দাম জোগান রেখাটি হবে একটি অনুভূমিক সরলরেখা। এক্ষেত্রে ঐ উপকরণের প্রকৃত উপার্জন ও ন্যূনতম জোগান দামের মধ্যে কোনো উবৃত্ত থাকে না। কিন্তু জোগান রেখা সম্পূর্ণ অস্থিতিস্থাপক হলে তা একটি উল্লম্ব সরলরেখা হবে। তখন এই উপাদানের দ্বারা অর্জিত সমগ্র অংশটিই হবে অর্থনৈতিক খাজনা। এক্ষেত্রে উপাদানটির স্থানান্তর আয় শূন্য। তখন জোগান দাম বাড়া বা কমার উপর জোগানের হেরফের হয় না, জোগান একই থাকে।
সুতরাং আধুনিক তত্ত্ব অনুযায়ী অর্থনৈতিক খাজনা হলো জমির প্রকৃত আয় থেকে জমির জোগান দাম বাদ দিলে যা পড়ে থাকে তা-ই। আর জমির জোগানের স্থিতিস্থাপকতার উপর নির্ভর করে অর্থনৈতিক খাজনা।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .