পিতা বিন্দুসারের মৃত্যুর পর আনুমানিক ২৭৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে অশােক সিংহাসন লাভ করেন। তখন তিনি ছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী। এর তের বছর পর কলিঙ্গযুদ্ধের মর্মান্তিক এবং হৃদয়বিদারক ঘটনাবলি তার জীবনে একটা বিরাট পরিবর্তন এনে দেয়। অবশেষে বৌদ্ধ সন্ন্যাসী উপগুপ্তের কাছে বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষা গ্রহণ করেন এবং সাম্রাজ্য বিস্তারের জন্য যুদ্ধের পথ তিনি সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করেন।
অশােকের ধর্মনীতির সারকথা
অধ্যাপক রাধাকুমুদ বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেছেন যে কলিঙ্গযুদ্ধের শােচনীয় পরিণাম অশােকের ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় জীবনে রূপান্তর ঘটিয়েছিল।
নীতিমূলক
অশােক যে ধর্ম (ধন্মাে’) প্রচার করেছিলেন তা প্রধানত ছিল নীতিমূলক। তিনি যে নীতিগুলি প্রচার করেছিলেন তা সমস্ত ধর্মেরই সারকথা। সকল ধর্মের প্রতিই তিনি ছিলেন শ্রদ্ধাশীল।
দ্বিতীয় স্তম্ভলিপির ব্যাখ্যা
দ্বিতীয় স্তম্ভলিপিতে অশােক তার ধর্মনীতি ব্যাখ্যা করে লিখেছেন যে ধর্ম হচ্ছে পাপের স্বল্পতা, কল্যাণকর্মের প্রাচুর্য, দয়া, দান, সত্য ও শৌচ। এইসব কারণে অনেকে অশােকের ধর্মকে কোনাে বিশিষ্ট ধর্ম না বলে কেবলমাত্র কর্তব্যকর্মের নীতি বলেই মনে করেন।
ঐতিহাসিক মতামত
ঐতিহাসিক জে. এফ. ফ্লিট মনে করেন, অশােকের ধর্ম ছিল। একান্তভাবে নীতিমূলক। রাধাকুমুদ মুখােপাধ্যায় অনুরূপভাবে মনে করেন অশােকের ‘ধ কে বৌদ্ধ ধর্ম বলা চলে না।
অশােকের ধর্মের ওপর বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব
একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে অশােক বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হয়েছিলেন, বৌদ্ধ সংঘের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন এবং তার প্রচারিত নীতিগুলির ওপর বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাবই সবচেয়ে বেশি ছিল।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .